পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শাড়ির উপর পঙ্কিল স্বাক্ষর অঙ্কিত করে দিয়ে কৃত্রিম প্রীতি জ্ঞাপন করলে। সিসি ঘাড় ধরে টেনে আনলে কেটির কাছে, কেটি তার নাকের উপর তর্জনী তাড়ন করে বললে, ‘নটি ডগ!'

 কেটি চৌকি থেকে উঠলই না। সিগারেট টানতে টানতে অত্যন্ত নির্লিপ্ত আড়ভাবে একটু ঘাড় বাঁকিয়ে যোগমায়াকে নিরীক্ষণ করতে লাগল। যোগমায়ার 'পরে তার আক্রোশ বোধ করি লাবণ্যর চেয়েও বেশি। ওর ধারণা লাবণ্যর ইতিহাসে একটা খুঁত আছে। যোগমায়াই মাসি সেজে অমিতর হাতে তাকে গতিয়ে দেবার কৌশল করছে। পুরুষ-মানুষকে ঠকাতে অধিক বুদ্ধির দরকার করে না, বিধাতার স্বহস্তে-তৈরি ঠুলি তাদের দুই চোখে পরানো।

 সিসি সামনে এসে যোগমায়াকে নমস্কারের একটু আভাস দিয়ে বললে, ‘আমি সিসি, অমির বোন।'

 যোগমায়া একটু হেসে বললেন, ‘অমি আমাকে মাসি বলে, সেই সম্পর্কে আমি তোমারও মাসি হই মা!'

 কেটির রকম দেখে যোগমায়া তাকে লক্ষ্যই করলেন না। সিসিকে বললেন, ‘এসো মা, ঘরে বসবে এসো।'

 সিসি বললে, ‘সময় নেই, কেবল খবর নিতে এসেছি অমি এসেছে কিনা।'

 যোগমায়া বললেন, 'এখনো আসে নি।'

 ‘কখন আসবেন জানেন?'

 'ঠিক বলতে পারি নে। আচ্ছা, আমি জিজ্ঞাসা করে আসি গে।'

১৫৬