পাতা:শেষের কবিতা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তো জিত হল, এবার আমারও যাতে হার না হয় সেটা করো।'

 'কী করতে হবে বলো।'

 'নরেনের সঙ্গে আমার একটা বাজি আছে। সে বলেছিল, জেণ্টেল্‌ম্যান্‌রা যেখানে যায় কেউ সেখানে তোমাকে নিয়ে যেতে পারে না, কিছুতেই তুমি রেস দেখতে যাবে না। আমি আমার এই হীরের আংটি বাজি রেখে বলেছিলুম, তোমাকে রেসে নিয়ে যাবই। এ দেশে যত ঝর্না, যত মধুর দোকান আছে, সব সন্ধান করে শেষকালে এখানে এসে তোমার দেখা পেলুম। বলো-না ভাই সিসি, কত ফিরতে হয়েছে বুনো হাঁস শিকারের চেষ্টায়, ইংরেজিতে যাকে বলে wild goose।'

 সিসি কোনো কথা না বলে হাসতে লাগল। কেটি বললে, ‘মনে পড়ছে সেই গল্পটা, একদিন তোমার কাছেই শুনেছি অমিট। কোন্ পার্সিয়ান ফিলজফার তার পাগড়িচোরের সন্ধান না পেয়ে শেষে গোরস্থানে এসে বসেছিল। বলেছিল পালাবে কোথায়? মিস্ লাবণ্য যখন বলেছিলেন ওকে চেনেন না, আমাকে ধোঁকা লাগিয়ে দিয়েছিল; কিন্তু আমার মন বললে ঘুরে ফিরে ওকে ওর এই গোরস্থানে আসতেই হবে।'

 সিসি উচ্চৈঃস্বরে হেসে উঠল।

 কেটি লাবণ্যকে বললে, ‘অমিট আপনার নাম মুখে আনলে না, মধুর ভাষাতে ঘুরিয়ে বললে কমলালেবুর মধু; আপনার বুদ্ধি খুবই বেশি সরল, ঘুরিয়ে বলবার কৌশল মুখে জোগায় না, ফস করে বলে ফেললেন অমিটকে জানেনই না।

১৬৪