নৈনিতালের সরোবরে নৌকো ভাসিয়ে কেটি তার হাল ধরেছে, আর অমিত তাকে পড়ে শোনাচ্ছে রবি ঠাকুরের ‘নিরুদ্দেশ যাত্রা।' কিন্তু, লোকে কী না বলে? যতিশংকর বুঝে নিলে, অমিতর মনটা পাল তুলে চলে গেছে ছুটিতত্ত্বের মাঝদরিয়ায়।
অবশেষে অমিত ফিরে এল। শহরে রাষ্ট্র, কেতকীর সঙ্গে তার বিয়ে। অথচ অমিতর নিজ মুখে একদিনও যতি এ প্রসঙ্গ শোনে নি। অমিতর ব্যবহারেও অনেকখানি বদল ঘটেছে। পূর্বের মতোই যতিকে অমিত ইংরেজি বই কিনে উপহার দেয়, কিন্তু তাকে নিয়ে সন্ধেবেলায় সে-সব বইয়ের আলোচনা করে না; যতি বুঝতে পারে, আলোচনার ধারাটা এখন বইছে এক নতুন খাদে। আজকাল মোটরে বেড়াতে সে যতিকে ডাক পাড়ে না। যতির বয়সে এ কথা বোঝা কঠিন নয় যে, অমিতর ‘নিরুদ্দেশ-যাত্রা’র পার্টিতে তৃতীয় ব্যক্তির জায়গা হওয়া অসম্ভব।
যতি আর থাকতে পারলে না। অমিতকে নিজেই গায়ে পড়ে জিজ্ঞাসা করলে, 'অমিতদা, শুনলুম মিস্ কেতকী মিত্রের সঙ্গে তোমার বিয়ে!'
অমিত একটুখানি চুপ করে থেকে বললে, ‘লাবণ্য কি এ খবর জেনেছে?'
'না, আমি তাকে লিখি নি। তোমার মুখে পাকা খবর পাই নি বলে চুপ করে আছি।'
'খবরটা সত্যি, কিন্তু লাবণ্য হয়তো-বা ভুল বুঝবে।'
যতি হেসে বললে, 'এর মধ্যে ভুল বোঝবার জায়গা