লাবণ্য হেসে বললে, ‘প্রাণ যদি দিতেই হয় তো সাবধানে দেবেন।’
‘সে কথা আমাকে বলা অনাবশ্যক। কম্যুন্যাল রায়টের মধ্যে আমি যেতে নারাজ। মুসলমান বাঁচিয়ে, ইংরেজ বাঁচিয়ে চলব। যদি দেখি বুড়োসুড়ো গোছের মানুষ, অহিংস্র মেজাজের ধার্মিক চেহারা, শিঙে বাজিয়ে মোটর হাঁকিয়ে চলেছে, তার সামনে দাঁড়িয়ে পথ আটকিয়ে বলব, যুদ্ধং দেহি— ওই যে লোক অজীর্ণ রোগ সারবার জন্যে হাসপাতালে না গিয়ে এমন পাহাড়ে আসে, খিদে বাড়াবার জন্যে নির্লজ্জ হয়ে হাওয়া খেতে বেরোয়।’
লাবণ্য হেসে বললে, ‘লোকটা তবু যদি অমান্য করে চলে যায়?’
‘তখন আমি পিছন থেকে দু হাত আকাশে তুলে বলব— এবারকার মতো ক্ষমা করলুম, তুমি আমার ভ্রাতা, আমরা এক ভারতমাতার সন্তান। বুঝতে পারছেন, মন যখন খুব বড় হয়ে ওঠে তখন মানুষ যুদ্ধও করে, ক্ষমাও করে।’
লাবণ্য হেসে বললে, ‘আপনি যখন যুদ্ধের প্রস্তাব করে-ছিলেন মনে ভয় হয়েছিল, কিন্তু ক্ষমার কথা যেরকম বোঝালেন তাতে আশ্বস্ত হলুম যে ভাবনা নেই।’
অমিত বললে, ‘আমার একটা অনুরোধ রাখবেন?’
‘কী, বলুন।’
‘আজ খিদে বাড়াবার জন্যে আর বেশি বেড়াবেন না।’
‘আচ্ছা বেশ, তার পরে?’