পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় $ S} r হইতেছিলেন তখন আসিল এই আশার অতীত সুসম্বাদ । সবিতা গলায় আঁচল দিয়া বহুক্ষণ মাটিতে মাথা ঠেকাইয়া প্ৰণাম করিয়া উঠিয়া বসিলেন, চোখ মুছিয়া কহিলেন, রাজু চিরজীবী হও বাবা,-সুখে থাকে। রাখালের আনন্দ ধরেন, মাথা হইতে গুরুভার নামিয়া গেছে, বলিল মা, আগেকার দিনে রাজা-রাণীরা গলার হার খুলে পুরস্কার দিতেন। শুনিয়া সবিতা হাসিলেন, বলিলেন, হার তো তোমার গলায় মানাবেন। বাবা, যদি বেঁচে থাকি বউমা এলে তঁর গলাতেই পরিয়ে দেবো । রাখাল বলিল, এ জন্মে সে গলা ত খুজে পাওয়া যাবেনা। মা, মাঝে থেকে আমিই বঞ্চিত হলুম। জানেন ত, আমার অদৃষ্ট মুখের-অন্ন ধূলোয় পড়ে ভোগে আসেন । সবিতা বুঝিলেন, সে সে-দিনের তঁহার গৃহে নিমন্ত্রণের ব্যাপারটাই ইঙ্গিত করিল। রাখাল বলিতে লাগিল, রেণু সেরে উঠুক, হার না পাই মিষ্টি-মুখ-করার দাবী। কিন্তু ছাড়বেন । কিন্তু সে-ও অন্যদিনের কথা, আজ চলুন। একবার রান্নাঘরের দিকে। এ ক'দিন শুধু ভাত খেয়ে আমাদের দিন কেটেছে। কেউ গ্ৰাহা করিনি, আজ কিন্তু তাতে চলবেন, ভালো করে খাওয়া চাই । আসুন তার ব্যবস্থা করে দেবেন। চলে বাবা যাই, বলিয়া সবিতা উঠিয়া গেলেন। সেখানে দূরে বসিয়া রাখালকে দিয়া তিনি সমস্তই করিলেন এবং যথাসময়ে সকলের ভালো করিয়াই আজি আহারাদি সমাধা হইল। সবাই জানিত সবিতা এখনো কিছুই খান নাই। কিন্তু খাবার প্রস্তাব কেহ মুখে আনিতেও ভরসা করিলন কেবল ফটকের মা নূতন লোক বলিয়া এবং না-জানার জন্যই কথাটা একবার বলিতে গিয়াছিল। কিন্তু রাখাল চোখের ইঙ্গিতে নিষেধ করিয়া দিল । সকলের মুখেই আজ একটা নিরুদ্বেগ হাসি-খুসি ভাব, যেন হঠাৎ