পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ଅନ୍ଧ শেষের পরিচয় দ্যাখো তারক, ফের যদি তুমিঅকস্মাৎ, আয়নায় দুই বন্ধুর মাথার উপরে আর একটি ছায়া আসিয়া পড়িল। নারীমূৰ্ত্তি। উভয়েই ফিরিয়া চাহিয়া দেখিল একটি অপরিচিত। মহিলা ঘরের প্রায় মাঝখানে আসিয়া দাড়াইয়াছেন । মহিলাই বটে । বয়স হয়ত যৌবনের আর এক প্ৰান্তে পা দিয়াছে, কিন্তু সে চোখেই পড়েনা । বৰ্ণ অত্যন্ত গেীর, একটু রোগ, কিন্তু সৰ্ব্বাঙ্গ ঘেরিয়া মৰ্য্যাদার সীমা নাই। ললাটে আয়তির চিহ্ন। পরণে গরদের শাড়ী, হাতে গলায় প্রচলিত সাধারণ দু-চার খানি গহনা, শুধু যেন সামাজিক রীতি পালনের জন্যই। দুই বন্ধুই কিছুক্ষণ স্তব্ধ বিস্ময়ে চাহিয়া রাখাল চৌকি ছাড়িয়া লাফাইয়া উঠিল,-এ কি ! নতুন-মা যে ! তাহার পরেই সে উপুড় হইয়া তাহার পায়ের উপর গিয়া পড়িল, দুই পায়ে মাথা ঠেকাইয়া প্ৰণাম যেন তাহার আর শেষ হইতেই চাহেনা । উঠিয়া দাড়াইলে রমণী হাত দিয়া তাহার চিবুক স্পর্শ করিয়া চুখন করিলেন। তিনি চৌকিতে বসিলে রাখাল মাটিতে বসিল এবং তারক উঠিয়া গিয়া বন্ধুর পাশে বসিল । হঠাৎ চিনতে পারিনি। মা । না পারবারই তো কথা রাজু। মনে মনে ভাবছি, চোখ পড়ে গেল। আপনার চুলের ওপর। রাঙা আঁচলের পাড় ডিঙিয়ে পায়ে এসে ঠেকেচে । এমনটি এ দেশে ঘুমার কারু দেখিনি। তখন সবাই বলতে এর খানিকটা কেটে নিয়ে এবার প্রতিমা সাজানো হবে । মনে পড়ে মা ? তিনি একটুখানি হাসিলেন, কিন্তু কথাটা চাপা দিলেন। বলিলেন, রাঙ্গুইনিই বুঝি তোমার নতুন বন্ধু ? নামটি কি ? খাল বলিল, তারক চাটুষ্যে। কিন্তু আপনি জানলেন কি করে ?