পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

నీt শেষের পরিচয় -জানে। সে জানে তুমি কলকাতায় আছো,-সে জানে তুমি "অগাধ ঐশ্বৰ্য্যে সুখে আছো । সবিতা মনে মনে বলিল, ধরণী, দ্বিধা হও ! ব্ৰজবাবু কহিতে লাগিলেন, সে তোমার সাহায্য নেবেনা, আর আমি, -গোবিন্দর শেষের ডাক আমি কানো শুনতে পেয়েছি। নতুন-বীে, আমার গণী-দিন ফুরিয়ে এলো, তবু যদি আমাকে কিছু দিয়ে তুমি তৃপ্তি পাও আমি নেবো । প্রয়োজন আছে বলে নয়,-আমার ধৰ্ম্মের অনুশাসন,--- আমার ঠাকুরের আদেশ বলে নেবো । তোমার দান হাত পেতে নিয়ে আমি পুরুষের শেষ অভিমান নিঃশেষ করে দিয়ে তৃণের চেয়েও হীন হয়ে সংসার থেকে বিদায় হবো । তখন যদি তার শ্ৰীচরণে স্থান পাই । সাধিতা স্বামীর মুখের দিকে চাহিতে পারিলনা কিন্তু স্পষ্ট বুঝিল তাহার চোখ দিয়া দুফোটা জল গড়াইয়া পড়িল । সেইখানে স্তব্ধ নতমুখে বসিয়া তাহার সকালের কথাগুলো মনে হইতে লাগিল । মনে পড়িল তখন স্বামীর স্নানের ঘরে ঢুকিয়া দ্বার রুদ্ধ করিয়া সে তাহাকে জোর করিয়া বলিয়াছিল, যদি না যাই কি করতে পারো আমার ? পায়ে মাথা রাখিয়া বলিয়াছিল এই তা আমার গৃহ, এখানে আছে আমার কন্যা, আছে আমার স্বামী । আমাকে বিদায় করে সাধ্য কার ? কিন্তু এখন বুঝিল কথাগুলা তাহার কত অর্থহীন, কত অসম্ভব। কত হাস্যকর তাহার জোর করার দাবী, তাহার ভিত্তি-হীন শূন্য-গৰ্ভ আস্ফালন আজ এক প্রান্তে দাড়াইয়া এক কুলত্যাগিনী নারী ও অপর প্রান্তে দাড়াইয়া তাহার স্বামী, তাহার পীড়িত সন্তানই শুধু নয়, মাঝখানে আছে সংসার, অাছে ধৰ্ম্ম, আছে নীতি, আছে সমাজবন্ধনের অসংখ্য বিধিবিধান। কেবলমাত্র অশ্রুজলে ধুইয়া স্বামীর পায়ে মাথা কুটিয়া এতবড় গুরুভার টলাইবে সে কি করিয়া ? আর কথা কহিলনা,