পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় S S কেন ? হওয়া "অসম্ভব বলে । বরের পিতামহ পাগল হ’য়ে মারা যায়, এক পিসী পাগল হয়ে আছে, বাপ পাগল নয় বটে, কিন্তু হলে ছিল ভালো । হাতে-পায়ে দড়ি বেঁধে লোকে ফেলে রাখতে পারতো । কি সৰ্ব্বনাশ ! কৰ্ত্তা কি এ সব খোজ করেননি ? রমণী কহিলেন, জানোই ত কৰ্ত্তাকে । ছেলেটি রূপবান, লেখা-পড়া করেছে, তাছাড়া ওদের অনেক টাকা । ঘটক সম্বন্ধ এনেছে, যা” বলেছে তিনি বিশ্বাস করেছেন। আর জানলেই বা কি ? সমস্ত শুনেও হয়ত শেষ পৰ্য্যন্ত তিনি বুঝতেই পারবেননা এতে ভয়ের কি আছে । রাখাল বিষন্ন-মুখে কহিল, তবেই তো ! তারক চুপ করিয়া শুনিতেছিল, বন্ধুর এই নিরুৎসুক কণ্ঠস্বরে সে সহসা উত্তেজিত হইয়া উঠিল,-তবেই তো মানে ? বাধা দেবার চেষ্টা করবেন, আর এই বিয়ে হয়ে যাবে ? এত বড় ভীষণ অন্যায় ? রাখাল কহিল, সে বুঝি, কিন্তু আমার কথায় বিয়ে বন্ধ হবে কেন ভাই ? আর কীৰ্ত্তাই তো শুধু নয়, আর সবাই রাজী হবে কেন ? তারক বলিল, কেন হবেনা ? বরের বাড়ীর মত মেয়ের বাড়ীরও কি সবাই পাগল যে বললেও শুনবেনা,-বিয়ে দেবেই ? কিন্তু গায়ে-হলুদ হয়ে গেছে যে ! এটা ভুলচো কেন ? হলেই বা গায়ে-হলুদ ! মেয়েকে তো জ্যান্ত চিতায় তুলে দেওয়া বায়না! বলিয়াই তাহার চোখ পড়িল সেই অপরিচিন্তা রমণী তাহার প্ৰতি নীরবে চাহিয়া আছেন। লজ্জিত হইয়া সে কণ্ঠস্বর শান্ত করিয়া বলিল, আমি জানিনে এরা কে, হয়ত কথা কওয়া আমার উচিত নয়, किन्छु সনে হয় রাখাল, তোমার প্রাণপণে বাধা দেওয়া কৰ্ত্তব্য। কোন মতে এ ঘটতে দেওয়া চলেন ।