পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

se এক সপ্তাহ পূর্বে রাখাল আসিয়া বলিয়াছিল, নতুন-মা, সতেরো নম্বর বাড়ীতে আপনি ত যাবেননা।--আজি সন্ধ্যাবেলায় যদি আমার বাসায় একবার পায়ের ধূলা দেন । -কেন রাজু ? --কাকাবাবুর জন্যে কিছু ফল-মূল কিনে এনেচি-ইচ্ছে তঁাকে একটু জল খাওয়াই-তিনি রাজি হয়েছেন। আসতে । --কিন্তু আমাকে কি তিনি ডেকেছেন ? --তিনি না ডাকুন আমি ত ডাকচি মা । কাল তঁরা চলে যাবেন। দেশে, বলেছেন গুছিয়ে গাছিয়ে তঁদের ট্রেনে তুলে দিতে । সবিতা জানিতেন ব্ৰজবাৰু কোথাও কিছু খানিনা, তঁহাকে সম্মত করাইতে রাখালকে অনেক চেষ্টা করিতে হইয়াছে।--বোধহয় ভাবিয়াছে এ-কৌশলেও যদি আবার দুজনের দেখা হয়। রাখালের আবেদনের উত্তরে সবিতাকে সেদিন অনেক চিন্তা করিতে হইয়াছিল, স্নেহার্দু চক্ষে তাহার প্রতি বহুক্ষণ নীরবে চাহিয়া থাকিয়া অবশেষে বলিয়াছিলেন, না। বাবা। আমি যাবোনা। আমাকে দেখে তিনি শুধু দুঃখই পান, আর দুঃখ দিতে আমি চাইনে । আবার এক সপ্তাহ গত হইয়াছে। রাখালের মুখে খবর মিলিয়াছে ব্ৰজবাবু মেয়ে লইয়া দেশে চলিয়া গেছেন। তঁহার এ-পক্ষের স্ত্রী-কন্যা রহিল কলিকাতায় ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে । রাখাল বলিয়াছে ভঁাহাদের কোন শোক নাই, কারণ অর্থ-কষ্ট নাই । বাড়ী ভাড়ার আয়ে দিন ভালই কাটিবে। অলঙ্কারের পুজি ত রহিলাই ।