পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSS শেষের পরিচয় নিজের জীবনের যে-কাহিনী সারদা আজও কাহাকে বলিতে পারে নাই, বলিয়াছে শুধু তাহাকে। সেই অকপট বিশ্বাসের প্রতিদান কি পাইল সে ? পাইল শুধু অশ্রদ্ধা ও অকরুণ লাঞ্ছনা। অথচ, ক্ষতি তাহার কি করিয়াছিল সে ? একটা কথারও প্রতিবাদ করে নাই। সারদা, শুধু নিরুত্তরে সহ্য করিয়াছে। নিরুপায় রমণীর এই নিঃশব্দ অপমান এতক্ষণে ফিরিয়া আসিয়া যেন তাহাকেই অপমান করিল। উত্তেজনায় চঞ্চল হইয়া রাখাল চেয়ার ছাড়িয়া উঠিয়া দাড়াইয়া বলিল, থাক আমার রান্না,—এই রাত্রেই ফিরে গিয়ে আমি তার ক্ষমা চেয়ে আসবো । তাকে স্পষ্ট করে বলবো কোথায় আমার জ্বালা, কোথায় আমার ব্যথা ঠিক জানিনে সারদা, কিন্তু যে সব কথা তোমাকে বলে গেছি সে সব সত্যি নয়, সে একেবারে মিথ্যে । কুকারে খাবার ফুটিতে লাগিল, ঘরের আলো জলিতে লাগিল, গায়ের চান্দরটা টানিয়া লইয়া সে দ্বারে তালা বন্ধ করিয়া পথে বাহির হইয়া १छिल । এ বাটীতে পৌছিতে বেশি বিলম্ব হইলন। সোজা সারদার ঘরের সম্মুখে আসিয়া দেখিল তালা ঝুলিতেছে সে নাই। উপরে উঠিয়া সম্মুখেই চোখে পড়িল দুখান চেয়ারে মুখোমুখি বসিয়া বিমলবাবু ও সবিতা । গল্প চলিতেছে। তাহাকে দেখিয়া একটু বিস্মিত হইয়াই প্রশ্ন করিলেন, তুমি কি এতক্ষণ এ-বাড়ীতেই ছিলে রাজু ? • • বাস্যৰ্ম্ম গিয়েছিলাম । বাসা থেকে আবার ফিরে এলে ? কেন ? রাখাল চট্ট করিয়া জবাব দিতে পারিলন। পরে বলিল, একটু কাজ আছে মা । ভাবলাম তারকের সঙ্গে অনেকদিন দেখা হয়নি একবার দেখা করে আসি । কাল ত আর সময় পাওয়া যাবেন ।