পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৬৫ শেষের পরিচয় খাবার খাইতে খাইতে মুখ না তুলিয়াই প্রশ্ন করিল-আচ্ছা সারদা, তুমি নিজে তো চা খাওনা ! ঘরে চায়ের সরঞ্জাম রেখেচ কার জন্য ? সারদা নিরীহ মুখে বলিল—এই ধরুন, তারকবাবু টাবুরাখাল বলিল-ও-বুঝেচি। হাতের অৰ্দ্ধ সমাপ্ত শিঙাড়াটি শেষ করিয়া খাবার সমেত প্লেটখানি রাখাল নামাইয়া রাখিল । সারদা ব্যস্ত হইয়া ঝুকিয়া পড়িয়া অকৃত্রিম ব্যগ্রতায় বলিয়া উঠিল -- ওকি ? রসগোল্লা মোটে ছুলেনইনা যে। না না, তা’ হবেনা দেবতা ! তুলে নিন রেকবি। সবগুলি না খেলে আমি মাথা পুড়ে মরবো। কিন্তু दल लक्ष5ि । অকস্মাৎ সারদার এই আন্তরিক চাঞ্চল্যে রাখাল হতভম্ব হইয়া বিমূঢ়োর মত পরিত্যক্ত প্লেট তুলিয়া লইয়া বলিল-কিন্তু আমার যে সত্যিই খেতে রুচি নেই। সারদা । সমস্ত খাবারগুলি না খেলে কি যথার্থই তোমার কষ্ট হবে ? সারদা আরক্ত মুখে কহিল-হঁ্যা, হঁ্যা, হবে। আপনি খান বলচি । রসগোল্লা। আপনি কত ভালবাসেন আমি জানিনে বুঝি ? সকালে গরম সিঙাড়া চায়ের সঙ্গে রোজইত আনিয়ে খান। বলুন, থানান ? রাখাল বিস্মিত কৌতুকে বলিল-কিন্তু তুমি এসব গুপ্ত-সংবাদ জানলে কেমন করে ? সারদা শান্তভাবে কহিল-আমি জানি। তারপরে হাসিতে হাসিতে বলিল-আচ্ছা, সত্যি করে বলুন তো, এক পেয়ালা চায়ে আপনার কোনওদিন তেষ্টা মেটো ? দু’। পেয়ালা চা না হলে মন খুৎ-খুৎ করে না কি ? রাখাল ৰসগোল্লাভিরা গালে ভাৱী গলায় বলিল-হু, বুঝেছি। কিন্তু আমি যে বাসায় চা খাই ঠিক এই রকম বড় পেয়ালায়, তারক কি সে খবরটাও তোমাকে দিয়ে গেছে ?