পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१e শেষের পরিচয় সারদা বাহির হইয়া বলিল—আসুন । বিমলবাবু ঘরে প্রবেশ করিয়া বলিলেন—এই যে রাজু এসে গেছ। স্বভাগ্যে আজ এদিকে একটা দরকারে এসেছিলাম ! মনে হল, পাশেই সখন এসে পড়েচি, সারদা-মাকে একবার দেখে যাই । এসে শুনলাম, ব্ৰজবাবুর অসুখের তার পেয়ে তোমরা আজই রওনা হাচ্চ। চলো তোমাদের পৌছে দিয়ে আসি। বড় গাড়ীটাতেই আজ বেরিয়েচি, মালপত্র নেওয়ার অসুবিধা হবেন । অনিচ্ছাসত্ত্বেও রাখাল আপত্তি করিতে পারিলিন । জিনিসপত্র গাড়ীতে উঠানো হইলে বিমলবাবু রাখালের হাত ধরিয়া বলিলেন-রাজু, আমার একটি অনুরোধ রেখে । ব্ৰজবাবুর অসুখে যদি কোনওরকম সাহায্যের প্রয়োজন বোঝে, আমাকে তার করতে ভুলোনা। রোগে অর্থবল ও লোকবল দুয়েরই দরকার । তুমি জানালে তৎক্ষণাৎ বড় ডাক্তার নিয়ে রওনা হতে পারব । আমি ব্ৰজবাবু ও রেণুর অকৃত্রিম হিতার্থী, বিশ্বাস করতে দ্বিধা কোরন । বিমলবাবুর কণ্ঠের গাঢ়তায় রাখাল বোধ হয় একটু অভিভূত হইয়া পড়িয়াছিল, তাই ঈষৎ আশ্চৰ্য্য ভাবেই তঁহার মুখের পানে তাকাইল । মান হাসিয়া বিমলবাবু বলিলেন-আমি জানি রাজু তোমার চেয়ে বড় বন্ধু আজ তঁদের আর কেউ নেই। তবুও—আমার দ্বারা যদি তাদের কোনও দিক থেকে কোনও উপকার বিন্দুমাত্ৰও সম্ভব মনে করে, খবর দিতে ভুলোনা । এইটুকু তোমায় জানিয়ে রাখলাম । রাখাল কি-যেন বলিতে যাইতেছিল, বিমলবাবু বলিলেন-রেণু আর ব্ৰজবাবু আজি কত বেশি অসহায় আমি তা জানি রাজু। রাখালের দুই চোখ সজল হইয়া উঠিল। বলিল-আপনার প্রতি অবিচার করেচি, আমাকে ক্ষমা করবেন। কাকাবাবুর অসুখে যদি কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হয়, আপনাকে সংবাদ দেব । >br