পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় o জীবনে বুঝি কিছুই পাইনি, কিছুই পেলামনা । মনে হয় যদিই কোনওদিন লক্ষ লক্ষ টাকা উপাৰ্জন করি, ত’তে কি আর লাভ হবে ? যশেও যদি দেশদেশান্তর ভরে যায়, তাতেই বা কি ? সম্মান-প্ৰতিপত্তির সবচেয়ে উঁচু চুড়াতে উঠলেও কি আমার আশৈশবের অতৃপ্ত তৃষ্ণ মিটবে ? চিরদিন যে,-অভিমান যে-দুঃখ নিজের গোপন অন্তরের মধ্যেই একাকী বহন করলাম, বিধাতার কাছে পৰ্য্যন্ত জানালাম না অভিযোগ, সে-বেদনা কি কোনোদিন দূর হবে আমার এই অর্থ মান যশ বা কৰ্ম্ম জীবনের চরিতার্থতা দিয়ে ? সমস্ত প্ৰাণ যেন হা হা করে ওঠে, মুশ ড়ে পড়ে যা” কিছু কৰ্ম্মের উৎসাহ, আকাজক্ষার উদ্দীপনা । মনে হয়েচে, श्रृणॆनदङीं কুল্লাহুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়ুে শৈশবেই করেছেন মাতৃস্নেহে বঞ্চিত, সে-য়ে বড়ে ।झूडों নিয়ে মানুষেরহাটে এসেচে, সে কথা কাউকে বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা করেনা। ’ জীবজগতে স্ৰষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ দান মাতৃস্নেহ, সেই-স্নেহেই যে আজীবন বঞ্চিত, তার আর-বেদনার আবেগে তারকের কণ্ঠ অবরুদ্ধ হইয়া আসিল । সবিতার চোখের কোণ সজল হইয়া উঠিয়াছিল। তিনি কিছুই বলিলেননা, সান্তুনাও দিলেননা। মুখে সুস্পষ্ট হইয়া উঠিল গভীর সহানুভূতির ছায়া। ঘে-নিবিড় বেদন তিনি নিঃশব্দে অতি সঙ্গোপনে অন্তরের নিভৃতে একাকী বহন করিয়া আসিতেছেন সুদীর্ঘকাল ব্যাপিয়া, তঁহার সেই বেদনাস্থানই তারক করিয়াছে আজ অজ্ঞাতে স্পর্শ । তারকের শেষের কথা কয়টি সবিতার সমগ্ৰ অন্তর আলোড়িত করিয়া তুলিয়াছিল। নিঃশব্দে নতনয়নে তিনি নিজের অশান্ত হৃদয়া বেগ সংযত করিতে লাগিলেন । সদর দরজায় পিওন হাকিল চিঠিতারক বাহিরে গিয়া পত্ৰ লইয়া আসিল ।