পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NA 49 সারদাকে লইয়া রাখাল যখন ব্ৰজবাবুর শয্যাপার্শ্বে গিয়া পৌছিল, রোগের প্রবল প্রকোপ তখন কতকটা সামলাইয়া উঠিলেও তিনি সম্পূর্ণ নিরাময় হন নাই। এই অসুস্থতায় ব্ৰজবাবু দেহের সহিত মনেও নিরতিশয় দুৰ্বল হইয়া পড়িয়াছিলেন । রাখালকে দেখিয়া তাহার নিমীলিগতনেত্ৰ বাহিয়া অশ্রু গড়াইয়া পড়িতে লাগিল । স্বভাবতঃ কোমলচিস্তু রাখাল তাহার পিতৃতুল্য প্রিয় কাকাবাবুর অসহায় অবস্থা দেখিয়া চোখের জল সংবরণ করিতে পারিলিনা । ব্ৰজবাবু মৃদুস্বরে ধীরে ধীরে বলিলেন,-রাজু, তোমাকে আমি ডেকেচি ৷ বাস্পাবারুদ্ধকণ্ঠ পরিস্কার করিয়া লইয়া কহিলেন-তোমার বোনটিকে দেখবার কেউ নেই বাবা । ওর জন্যেই তোমাকে ডাকা । রাখাল কথা কহিলন । ব্ৰজবাবু অতিশয় ক্ষীণস্বরে বলিতে লাগিলেন --রাজু, এখানে এরা আমাকে “একঘরে” করে রেখেচে । আমার গোবিন্দজী তার নিজের ঘরে ঢুকতে পাননি, তঁর নিজের বেদীতে উঠতে পাননি। রেণু আমার গোবিন্দজীর ভোগ রাধে বলে সকলেরই আপত্তি।--আমি অবর্তমানে এখানে কেউ আমার রেণুর ভার নেবেন। ওকে তুমি নিয়ে গিয়ে ওর বিমাতার কাছেই পৌছে দিও। হেমন্ত রাগ করবে। জানি । কিন্তু আশ্রয় দেবে নিশ্চয় । এছাড়া আর তো কোনওঁ উপায় খুজে পাচ্চিনি বাবা । রাখাল চুপ করিয়াই রহিল। পিতৃহীনা, কপৰ্দকশূন্য অমূঢ়া রেণুকে