পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় RZVe উঠেচে যে, এখন কোনটা খাটি কোনটা মেকি চেনা কঠিন। জীবনে যত বড়ো সঞ্চয় যে পেয়েছে বোন, তাকে ততো বেশি মূল্যও দিতে হয়েচে গভীর দুঃখের মধ্য দিয়ে। অন্ততঃ এটা ঠিক বুঝেচি যে, দুঃখের কষ্টিপাথরে না পড়লে জীবনের যাচাই হয়না । রেণু কোন দিনই কিছু বিশেষ করিয়া জানিবার জন্য সারদাকে প্রশ্ন করিতনা’। আজ কিন্তু সে ১ হঠাৎ জিজ্ঞাসা করিয়া বসিল,- সারদাদিদি, তোমার নিজের জীবনে তো অনেক দুঃখই পেয়েচাে ভাই, তাতে খাটি সামগ্রী কি কিছু সঞ্চয় করতে পেরেছে ? সারদা চমকিয়া উঠিল। রেণু যে এরূপ প্রশ্ন করিতে পারে সে সম্ভাবনা তাহার একবারও মনে হয় নাই। একটু বিব্রত হইয়াই বলিল,-কি করে বলবো দিদি ? কেন ? যেমন করে এই সমস্ত কথা বলচ । সারদা সহসা অনাবশ্যক গভীর হইয়া বলিল, সঞ্চয় কিছু করতে পেরেচি। কিনা জানিনে, তবে সম্বল যে যথেষ্ট পেয়েচি আর সে যে ষোলো আনাই খাটি তাতে আমার সংশয় নেই। সরলমতি রেণু মমতায় বিগলিত হইয়া কহিল, সারদাদিদি, যে-স্বানী তোমাকে একলা অসহায় ফেলে রেখে পালিয়ে রইলেন, তঁাকে এখনও এত ভক্তি কর তুমি ? সারদা জবাব দিলন। মুখে তার বেদনার চিহ্ন সুস্পষ্ট হইয়া উঠিল। আনাজের ঝুড়ি ও বঁটি লইয়া অন্য ঘরে রাখিতে উঠিয়া গেল । রাখাল আসিয়া ডাকিল, রেণু--রাজুদা ? কাকাবাবুর রান্নাটা হয়েচে কি বোন ?