পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় 9 e 9 বিবাহটা যে ঠিক মরশুমী ফুল, আমি মানতে পারলামনা । বিয়ের ফুল ফোটা বলে একটা কথা এদেশে আছে, কিন্তু কোনো দেশেই ওটা যে ফুলের চাষের নিয়ম মেনে চলে এমন প্ৰমাণ বোধহয় নেই । বিমলবাবু বলিলেন, না না, তা’ নয়। আমি বলতে চাইছি, জীবনে বিবাহের একটা নির্দিষ্ট শুভ লগ্ন আছে । সে লগ্নটি উত্তীর্ণ হয়ে গেলে আর বিবাহ হয়না। যারা তারপরেও বিবাহ করেন, সে ঠিক বিবাহ নয়।

-6न5 ऊ'श्न कि ?

--সেটা শুধু স্ত্রী-পুরুষের একত্র বসবাস মাত্র। কোনও ক্ষেত্রে বংশ রক্ষার প্রয়োজনে, কোনও ক্ষেত্রে সংসার যাত্ৰা নির্বাহের কিংবা সুখ সুবিধা ও আরামের প্রয়োজনে,-কোেনও ক্ষেত্রে কেবলমাত্ৰ হৃদয়মনের বিলাসিত চরিতার্থের জন্য । বিস্মিত কৌতুহলে ব্ৰজবাৰু প্রশ্ন করিলেন ঐ সকল বাদ দিয়ে বিবাহকে আর অন্য কি বস্তু বলতে চান। আপনি ? —সেটা ঠিক বুঝিয়ে বলা একটু কঠিন। সংসারে দেখা যায় সমাজ অনুমোদিত পুরুষ ও নারীর মিলনকে বিবাহ বলা হয়। কিন্তু আমি তা” মনে করিনা। মানুষের জীবনে এমন একটা বসন্তঋতু আসে, এমন একটা আনন্দকাল আসে, যে-পরমক্ষণে নর-নারীর ঈপ্সিত মিলন, দেহে মনে অপূর্ব রসে ও রঙে রঙীন হয়ে ওঠে। দুটি প্রাণের, দুটি দেহামনের সেই যে রস-মধুর বর্ণরাগ-তাকেই বলি বিবাহ। সূৰ্য্যাস্তের পর মুহূৰ্ত্তেই, যখন সন্ধ্যা নয়। অথচ দিন অবসান হয়েছে, সেই সুন্দর সন্ধিলগ্ন, সেটুকুর আয়ু অতি অল্পমাত্র স্থায়ী। তাকে আমরা গোধূলিক্ষণ বলি। সেই রমণীয় সময়টুকুর মধ্যে পশ্চিমের আকাশে জেগে ওঠে-অপরূপ আলোর লীলা আর অফুরন্ত রঙের বৈচিত্ৰ্য যা’ সমস্ত দিবা-রাত্রির দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আর কোনক্রমে কোনো মুহূৰ্ত্তেই