পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় & সবিতার মুখে বেদনার চিহ্ন মাত্ৰ নাই। বরং ঠোঁটের প্রান্তে চাপা। হাসির রেখা । সবিতা বলিলেন; তুমি বুঝি এই ভেবে ভয় পেয়েছ সারদা যে, জিনিষ ফেরৎ এসেছে শুনে তোমাদের মা দুঃখে ক্ষোভে শয্যাশায়ী হয়ে পড়বেন, নয় ? সারদা লজ্জিত হইয়া বলিল, না, তা ঠিক ভাবিনি। তবে--হয়তো মনে খুবই আঘাত পাবেন ভয় হয়েছিল। সবিতা সস্নেহে সারদার পিঠে মাথায় হাত বুলাইতে বুলাইতে বলিলেন, বোকা মেয়ে, তোমার মতন করে মায়ের হৃদয়টার দিকেই কেবলমাত্র তাকিয়ে মাকে ভালবাসতে সবাই কি শিখেচে ? এ নিয়ে রেণুর উপরে তে রাগ করতে পারিনে মা, তার দোষ নেই কিছু। সে কথা আর আপনাকে বলতে হবেনা। রেণু যে আপনারই মেয়ে আজ যেন তা’ সব চেয়ে স্পষ্ট করে দেখে এলাম মা ! সবিতা সেকথা এড়াইয়া গিয়া সহজসুরে কহিলেন, কি বলে তোমায় ফেরালে সে অ্যাজ ? সারদা আনুপূর্বিক বিবরণ জানাইয়া শেষে বলিল, আচ্ছ না, একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, আপনি কি ফেরৎ আসবে জেনেই জিনিষ পাঠিয়েছিলেন ? সাধিতা মাথা নাড়িয়া ইঙ্গিতে জানাইলেন, না । তারপর জিজ্ঞাসা করিলেন, সারদা, ঠিক করে বলে তো মা, সত্যিই কি ওদের কোনো অভাব অনটন নেই দেখে এলে ? ভিতরের কথা কি করে জানবো মা ? দেখে কী মনে হ’ল ? সারদা নতশিরে নিরুত্তর রহিল ।