পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SUS FI । শেষের পরিচয় কুজ্বাটিকায় বিলীন হইয়া গেল ? মুহূত্তের অন্ধকাশে এত বড় প্ৰলয় কেমন করিয়া সংঘটিত হইল, যাচ্চ তাঙ্কার নিজেরই স্বপ্নের অগোচয় । সবিতার এই অবাধ অশ্রুনির্যক্ত চিন্তাধারায় ভিসা বাধা পড়িল । দ্বারে ঘন ঘন করাঘাতের সঠিত তারকের কণ্ঠম্বর শোনা গেল।--নতুন-মা- নতুন-মা—একবার দোরটা খুলুন- ভ০ সবিতা উঠিয়া বসিয়া নিজেকে একটু সন্থত করিতে না করিতে দ্বারে পুনঃ পুনঃ আঘাত ও উপকূৰ্য্যুপরি বা গ্ৰী ডাক শোনা যাইতে লাগিল । সত্বর মুখ চোখ মুছিয়া ক্ষিপ্ৰহস্তে গায়ে মাথায় বসান সুসংযত করিয়া সবিতা দ্বার খুলিলেন । তারকের এই অধীর ব্যস্ততায় তিনি বাড়ীতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়াছে অনুমান করিয়া শঙ্কিত হুইয়া উঠিয়াছিলেন। দরজা খুলিয়া বাহির হইবা মাত্র তারক বলিল, আপনি নাকি রোজই রাত্রে অনাহারে কাটাচ্চেন শুনলাম ! আজিও কিছুই মুখে দেননি। শরীর কি খুবই খারাপ হয়েচে ? তারকের প্রশ্ন শুনিয়া সাধিতা বিস্ময় ও বিরক্তিতে স্তব্ধ গুইয়া গেলেন । কোনো উত্তর দিলেননা । তারক পুনরায় প্রশ্ন করিল। না, আমি ভালই আছি। সবিতা শান্ত গলায় জবাব দিলেন । তবে কেন রোজ এমন করে উপোস করে থাকেন ? না না, সে আমি শুনবোন । কিছু-না-কিছু খাওয়া দরকার। কালই আনি ডাক্তার নিয়ে আসব বা তারকের কণ্ঠে যথেষ্ট উদ্বিগ্নতা প্ৰকাশ পাইল । ও-সব হাঙ্গামা কোরনা তারক । আমি নিষেধ করাচি । তা’হলে বলুন, কেন অকারণ উপোস দিয়ে শরীরের উপর এমন অত্যাচার কারচেন ? রাত হয়েচে, শোওগে তারক ।