পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

°念> শেষের পরিচয় আসিয়া দাঁড়ায়, “রাখাল তাহার চেহারা দেখিয়াই বুঝিতে পারে। আজ আবার কাছে জিনিস একটা গেল। কাচের ভাঙা টুকরাগুলি সাবধানে ফেলিয়া দিতে এলিয়া রাখাল তাহকে ভবিষ্কৃতে ক্লাচের সামগ্ৰী সতর্কভাবে নাড়াচাড়া করিবার সদুপদেশ দেয়। তৎক্ষণাৎ প্রবলভাবে মাথা হেলাইয়া সম্মতিজ্ঞাপন করিয়া আবার তিন লাফে নীলু চুটিয়া চলিয়া যায়। রাখাল তাহার নানী বুড়ির নাতিকে আদর কfয়া ডাকে – নীলু খুড়ো । বেলা চারটার সময় নীলু আসিয়া লখন রাখাদকে ডাকিয়া জাগাইল, চোখ ব্ৰুগড়াইয়া বিছানায় উঠিয়া বসিয়া তাহার , গুয়াল ঠাইল, “আজি খাওয়া হয় নাই। বিমলবাবুর সহিত দেখা কমিল্লা বাড়া "ফিরিয়া কাপড়জামা না। ছাড়িয়া বিছানায় শুষ্টয়াছিল, কখন যে ঘুমাইয়া পড়িয়াছে টের পায় নাই । ঘড়ির পানে চাহিয়া রাখাল নিজের পরে বিরক্ত হইল। আজকাল তাহার যেন কী হইয়াছে। ঘরদুয়ার, কাজকৰ্ম্ম, বেশভূষা, শরীর-স্বাস্থ্য কোনও দিকে আর মনোযোগ নাই। এমনকি সবদিন পাওয়াদাওয়ারও খেয়াল থাকেনা তার । এ ভাল নয় । গরীব মানুষ সে । এ রকম খামখেয়াল বড়মানুষদেরই সাজে। যাদের প্রতিবারের পেটের অন্ন প্ৰতিদিনের উপাৰ্জনের উপর নির্ভর করে, তাদের এ অন্যমনস্কতা শোভা পায়না । বারংবার সুদীর্ঘ কামাই করার দরুণ তাঙ্গার টিউশনীগুলি একে একে গিয়াছে । কেবল একটিমাত্র টিউশনী আজও কোনওক্রমে টিকিয়া আছে, সে কেবল রাখাল তাহদের সময়-অসময়ের একমাত্ৰ বিশ্বাস্ত । কাজের মানুষ বলিয়া । টিউটররূপে তাহার মূল্য না থাকিলেও, বন্ধু হিসাবে, বিশ্বস্ত কাজের লোক হিসাবে মূল্য আছে। নিজের লেখাপড়ার কাজও এইসব ঝঞ্চাটে বন্ধ হইয়া রহিয়াছে । যাত্রার পালা লেখা ও বেনামীতে নাটক রচনায় বহুদিন আর হাত দিতে পারে নাই। ব্যাঙ্কের ও