পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় 9\8ی চরম ক্ষতির দুঃখ ভোগ করতে হয়। সংসারের এই নিয়ম -সবিতার কণ্ঠস্বরে গভীর স্নেহ উৎসারিত হইল । প্লাখাল আর কথা কহিল না। সারুদ উঠিয়া যাইতেছে দেখিযা তাঙ্কাকে জিজ্ঞাসা করিল, তারক এখন বাড়ী আছে কি জানো সারদা ? সারদা বলিল, আজ তো কাছারী নেই । ‘ সম্ভবতঃ নিচেয়া ঠার আফিস-কামরাতেই আছেন। রাখাল বলিল, তারকের সাথে একটু দরকারী কথা আছে । আমি চললাম নতুন-মা । সবিতা বর্লিলেন,-চা গেয়ে যেও রাজু। সারদা, তুমি যে কচুরী তৈরি করেছে, রাজুকে চায়ের সঙ্গে দিতে ভুলোনা । সারদা চাসিমুখে বলিল, সে তো উনি খেতে চাইবেন না। মা, খেলেও নিন্দেই করবেন । রাখালের মন আজি ভাল ছিলনা। অন্যসময় হইলে সারদার এই কথা লইয়াই হয়তো তাহাকে ক্ষেপাইবার জন্য অনেক কিছু বলিত । চিত্ত আজি অপ্ৰসন্ন বলিয়াই বোধহয় ধিরসিকণ্ঠে বলিল, না, ঘরের তৈরি খাবার খাওয়া আমার অভ্যাস নেই। সারদা, ইচ্ছেও নেই। যাদের জন্য তৈরি করেছে, তঁদেরই খাইয়ো । সারদা বিস্মিত নয়নে রাখলের পানে তাকাইয়া রহিল । তাহার বিবর্ণ মুখের প্রতি দৃষ্টি পড়ামাত্র রাখালের মনের মধ্যে বেদনা ধ্বক করিয়া উঠিল, কিন্তু কোনও কথা না কহিয়া ঘর হইতে সে বাহির হইয়া গেল । সবিতা সারদার পানে তাকাইয়া সস্নেহ সান্থনার সুরে বলিলেন, ওর" কথায় মনে দুঃখ পেওনা সারদা । আমার ”পরে রাগ করেই ও তোমাকে কঠিন কথা শুনিয়ে গেল। নানাকারণে রাজুর মনের অবস্থা এখন ভালো নেই মা !