পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় 9 fift ਭੌਰ সুরম্য ‘গেষ্ট হাউস’-এ বা অতিথিভবনে বিমলবাবুদের থাকিবার বন্দোবস্ত তো করিয়া দিলেনই, নিজের একখানি মোটরকারও বিমলবাবুর (সৰ্বদা ব্যবহারের নিমিত্ত ছাড়িয়া দিলেন । মথুরা হইতে মোটরযোগে বৃন্দাবনে গিয়া বিমলবাবু বলিলেন, সবিতা, ব্ৰজবাবুদের শর্তা দেখা করতে যাবে নাকি ? সবিল্প বলিলেন, পাগল ভরোচ। আমরা দেবদর্শন করতে এসেচি, তাই দেখে ফিরে যাব । সমস্ত দিন বৃন্দাবনের নানা স্থানে ঘুরিয়া ক্লান্ত বিমলবাবু বৈকালে বলিলেন, চলে এইবার মথুরায় ফেরা যাক । সবিতর্গ বলিলেন, শুনেচি, বৃন্দাবনে গোবিন্দজীর আরতি ভাৱী সুন্দর। অল্পতিটা দেখে গেলে হয়না ? বিমলবাবু বলিলেন, বেশতো, আরতি দেখেই ফেরা যাবে। বিস্তৃত একটি মাঠের পাশে গাছতলায় মোটর রাখিয়া ভঁাহারা সতরঞ্চি বিছাইয়া শ্ৰান করিতে বসিলেন । মহাদেও দরওয়ান বিমলবাবুর চায়ের সরঞ্জামপূর্ণ বেতের বাক্স গাড়ী হইতে নামাইয়া ষ্টেভ জালিয়া গরমজল প্ৰস্তুত করিতে প্ৰবৃত্ত হইল। সবিতা চা থাননা । কিন্তু নিজহস্তে চা তৈয়ারী করেন। এলুমিনিয়ম কেটলী হইতে ফুটন্ত জল চীনামাটীর চা-পাত্রে ঢালিয়া, চিনি, চা, দুধ প্ৰভৃতি, মহাদেও সবিতার সম্মুখে অগ্রসর করিয়া দিল । ক্লান্ত কণ্ঠে সবিতা বলিলেন, মহাদেব, তুমিই আজ চা তৈরি কর । আমি ঘুরে ঘুরে বড় ক্লান্ত হয়েচি। বিমলবাবু উদ্বিগ্ন হইয়া বলিলেন, তোমার শরীর খারাপ ঠেকছে নাকি ? তা’হলে আজ আর মন্দিরে ভীড়ের মধ্যে গিয়ে কাজ নেই । সবিতা বলিলেন, না, এমন কিছুই হয়নি। আরতি দেখব, সঙ্কল্প যখন করেচি, না দেখে ফিরে যাবনা।