পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

୫୩ শেষের পরিচুয় কি করবেন। তিনি শুনি ? রাখাল জবাব দিতে গিয়া হঠাৎ চাপিয়া গেল। ব্ৰজবাবু দেখিয়া বলিলেন, লজ্জা নেই রাজু, বলে । আমি অনুমতি দিচ্চি । তথাপি রাখালের সঙ্কোচ কাটেন, ইতস্তত: করিয়া শেষে কহিল, ও লোকটা গায়ে হাত দিতে পৰ্য্যন্ত পারে । কার গায়ে হাত দিতে পারে রাজু? মোজকৰ্ত্তার ? স্থা, একবার ঠেলে ফেলে দিয়েছিল, পোনর-ষোল দিন কাকাবাৰু উঠতে পারেন নি। নতুন-মার চোখের দৃষ্টি হঠাৎ ধ্বক করিয়া জলিয়া উঠিল, -- তারপরেও ও খাড়ীতে আছে ? খাচ্চে পরচে ? রাখাল বলিল, শুধু নিজে নয়, মাকে পৰ্য্যস্ত এনেছেন। কাকাবাবুৰু শাশুড়ী । পরিবার নেই, মারা গেছেন, নইলে তিনিও বোধ করি এতদিনে এসে হাজির হতেন । শেকড় গেড়ে ওরা বসেছে মা, নড়ায় সাধ্য কাৱ ? আমাকে একদিন নিজে আশ্রয় দিয়ে এনেছিলেন বলে কেউ টলাতে পারেনি কিন্তু মামাবাবুর একটা ভ্ৰকুটির ভার সইলোনা, ছুটে পালাতে চলে । সত্যি কথা বলি মা, রেণুর বিয়ে নিয়ে কাকাবাবুর সম্বন্ধে আমার মস্ত ভয় আছে। নতুন-বোঁ বিস্ফারিত চক্ষে চাহিয়া ব্লছিলেন । নিরূপায় নিস্ফল আক্ৰোশে তাহার চোখ দিয়া যেন আগুনের স্রোত বহিতে লাগিল । রাখাল ইঙ্গিতে ব্ৰজবাবুকে দেখাইয়া বলিল, এখন হেমন্তবাবু বাড়ীর কৰ্ত্তী, তার মা হলেন গিল্পী । দাবানলের মধ্যে এই শান্ত, নিরীহ মানুষটিকে একলা ঠেলে দিয়ে আমার কিছুতে ভয় ঘোচেনা । অথচ, পাগলের হাত থেকে রেণুকে বাচাতেই হবে । আজ। আপনার মেয়ে, আপনার স্বামী বিপদে-কুল-কিনারা পায়না মা, এ ভাবলেও আমার মাথা খুড়ে' ক্ষুন্নতে ইচ্ছে করে ।