পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q ○ শেষের পরিচয় তাহার হাতটা ধরিয়া ফেলিলেন, বলিলেন, এতকাল একবার দেখা দিতে নেই হে ! বেশ যা হোক সব। কিন্তু কি সৰ্ব্বনাশ করলে মেয়েট । পুলিশে এবার বাড়ীশুদ্ধ সবাইকে হয়রান করে মারবে। দুশ্চিন্তার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া কহিলেন, বার বার তোমাকে বলি নতুন-বীে, যাকেতাকে ভাড়াটে রেখোনা। লোকে বলে শূন্য গোয়াল ভালো । নাও, এবার সামলাও । একটা কথা যদি কখনো আমার শুনলে ! রাখাল কহিল, একে হাসপাতালে পাঠানাের ব্যবস্থা করেননি কেন ? ঠাসপাতালে ? বেশ । তখন কি আর ছাড়ানো যাবে ভাবো ? আত্মহত্যা যে ! রাপাল কহিল, কিন্তু তঁাকে বাচানোর চেষ্টা করা চাই তো । নইলে, আত্মহত্যা যে তঁাকে বধ করায় গিয়ে দাড়াবে। রমণীবাবু ভয় পাইয়া বলিলেন, সে তো জানি হে, কিন্তু হঠাৎ ব্যস্ত হয়ে কিছু-একটা করে ফেললেই তো হবেনা। একটা পরামর্শ করা তো দরকার ? পুলিশের ব্যাপার কি না। : নতুন-মা বলিলেন, তা’হলে চলো ; কোন ভালো এটর্ণির আফিসে গিয়ে আগে পরামর্শ করে আসা যাক । রমণীবাবু জ্বলিয়া গেলেন,-তামাসা করলেই তো হয়না, নতুন-বেী, আমার কথা শুনলে আজ এ বিপদ ঘাঁটুতোনা। এ সকল অনুযোগ অর্থহীন উচ্ছাস ব্যতীত কিছুই নয় তাহ নূতন লোক রাখালও বুঝিল । নতুন-মা জবাব দিলেননা, হাসিয়া শুধু রাখালকে কহিলেন, চলো ত বাবা দেখিগে কি করা যায়। রমণীবাবুকে উৰ্দেশ করিয়া বলিলেন, তুমি ওপরে গিয়ে বসোগে সেজবাবু, ছেলেটাকে নিয়ে আমি যা’ পারি করিগে । কেবল এইটি কোরো, ব্যস্ত হয়ে লোকজনকে যেন বিব্রত করে তুলোনা ।