পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় brど。 করেন কি ? যোগেশ তৎক্ষণাৎ উত্তর করিয়াছে, বিশেষ কিছুই নয় । তারপরে মুচকিয়া হাসিয়া কহিয়াছে, করার দরকারই বা কি ! এ কথার নানা অর্থ। কলিকাতার বিশিষ্ট লোকদের বিবিধ তথ্য রাখালের মুখে-মুখে । বাড়ীর মেয়েদের পর্য্যন্ত নাম জানা। নূতন ব্যারিষ্টার, সদ্য-পাশকরা আই-সি- এসদের উল্লেখ সে ডাক নাম ধরিয়া করে । পিচু বোস, ডাম্বল সেন, পটল বাড়িয্যে-শুনিয়া অতদূর প্রবাসের সামান্য চাকুরি-জীবি বাঙালীরা অবাক হইয়া যায়। কিন্তু এতকাল বিবাহের কথায় রাখাল শুধু যে মুখেই আপত্তি করিয়াছে তাই নয়, মনের মধ্যেও তাহার ভয় আছে । কারণ, নিজের অবস্থা সম্বন্ধে সে অচেতন নয় । সে জানে, এই কলিকাতা সহরে তাহার পরিচিত বন্ধু-পরিধি যথেষ্ট সঙ্কুচিত না করিয়া পরিবার প্রতিপালন করা তাহার সাধ্যাতীত। যে-পরিবেষ্টনে এতকাল সে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করিয়াছে সেখানে ছোট হইয়া থাকার কল্পনা করিতেও সে পরামুখ । তথাপি, নিঃসঙ্গ জীবনের নানা অভাব তাহাকে বাজে। বসন্তে বিবাহােৎসবের বাণী মাঝে মাঝে তাহাকে উতলা করে, বরানুগমনের সাদর আমন্ত্রণে মনটা ভয়ত হঠাৎ বিরূপ হইয়া উঠে, সংবাদপত্রে কোথায় কোন আত্মঘাতিনী অনুঢ়া কন্যার পাণ্ডুর মুখ অনেক সময়ে তাহাকে যেন দেখা দিয়া যায়, হয়ত বা অকারণ অভিমানে কখনো মনে হয় সংসারে এত প্ৰাচুৰ্য্য, এত অভাব, এত সাধারণ, এত নিরস্তরের মধ্যে শুধু সেই-কি কাহারো চোখে পড়েনা ? শুধু তাহাকেই মালা দিতে কোথাও কোন কুমারীই কি নাই ? কিন্তু এ সকল তাহার ক্ষণিকের। মোহ কাটিয়া যায়, আবার সে আপনাকে ফিরিয়া পায়,-হাসে, আমোদ করে, ছেলে পড়ায়, সাহিত্যালোচনায় যোগ দেয়,--আহবান আসিলে বিবাহের আসর সাজাইতে