পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

බ්ථි শেষের পরিচয় আর কাকাবাবু-চারজনের মতো চাল ধুয়ে ফ্যালো, আমি নিচে থেকে চট্ট করে স্নানটা সেরে আসি । কঁচা আনাজ কিছু আছে ত? আছে। বেশ, তাও দুটাে কুটে দাও দিকি, একটা চচ্চড়ি রোধে নিই-আমি আবার এক তরকারী দিয়ে ভাত খেতে পারিনে । রেলিঙের উপর কাচা কাপড় শুকাইতেছিল, রাখাল টানিয়া লইয়া নিচে চলিল, বলিতে বলিতে গেল, কাকাবাবু, দেরি করবেননা, শীগগীির উঠুন। রেণু, নেয়ে এসে যেন দেখতে পাই তোমার খাওয়া হয়ে গেছে। মধু এসে পড়লে যে হয়— বিষঃ, নীরব গৃহের মাঝে হঠাৎ কোথা হইতে যেন চেঁচামেচির একটা পুড়ি বহিয়া গেল । স্নানের ঘরে ঢুকিয়া দ্বার রুদ্ধ করিয়া রাখাল ভিজা মেঝেয় পড়িয়া মিনিট দুই তিন হাউ হাউ করিয়া কান্না জুড়িয়া দিল--ছেলেবেলায় অকস্মাৎ যেদিন ধিসূচিকায় তাহার বাপ মরিয়াছিল। ঠিক সেদিনের মতো । তারপরে উঠিয়া বসিল, ঘটি কয়েক জল মাথায় ঢালিয়া কাপড় ছাড়িয়া বাহিরে আসিল । একেবারে সহজ মানুষ, -- কে বলিবে ঘরে কবাট দিয়া এইমাত্র সে বালকের মতো মাটিতে পড়িয়া কি কাণ্ডই করিতেছিল। রাধাবাড়ায় রাখাল অপটু নয়। নিজের জন্য এ কাজ তাহাকে নিত্য করিতে হয়। সে অল্পক্ষণেই সমস্ত সারিয়া ফেলিল। তাহার তাড়ায় ঠাকুরের পূঞ্জ, ভোগ প্রভৃতি সমাধা হইতেও আজ অযথা বিলম্ব ঘটিলন । রাখাল পরিবেশন করিয়া সকলকে খাওয়াইয়া নিজে খাইয়া লিচে হইতে গা ধুইয়া কাপড় ছাড়িয়া আবার যখন উপরে আসিল তখন বেলা তিনটা বাজিয়াছে। রেণু অদূরে বসিয়া সমস্ত দেখিতেছিল, শেষ হইলে বলিল, রাজুদ, তুমি আমাদেরও হারিয়েছে। তোমার যে বউ হবে সে ভাগ্যবতী। কিন্তু বিয়ে কি তুমি করবেন ? ]