সময় সদর দরজা ভিতর হইতে বন্ধ ছিল। সেই দরজা আমি খুলিয়া দিলে, আমার বাবু এই বাড়ী হইতে বহির্গত হইয়া যান। সেই সময় সেই দরজা আমি পুনরায় বন্ধ করিবার বাসনা করিয়া যেমন উহা বন্ধ করিবার চেষ্টা করি, সেই সময় হরি বাহির হইতে আসিয়া বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে। সেই সময় তাহার অবস্থা দেখিয়া, আমার মনে কেমন একরূপ সন্দেহ আসিয়া উপস্থিত হয়। উহাকে দেখিয়া আমি বেশ বুঝিতে পারিয়াছিলাম, ও যেন সমস্ত রাত্রি জাগরণ করিয়াছে, আর উহার মনে যেন কি একটী ভয়ানক চিন্তা আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে। ইহার পূর্ব্বে আমাদিগের সহিত যখন হরির সাক্ষাৎ হইত, সেই সময় দুই একটী কথা না বলিয়া, সে কখনও প্রস্থান করিত না। কিন্তু সে দিবস আমার সহিত কোন কথা না বলিয়া, যেন নিতান্ত চিন্তিত অন্তঃকরণে সে তাহার মাতার গৃহের ভিতর প্রবেশ করিল।”
চতুর্থ ভাড়াটিয়া কহিল,—“যে দিবস রাজকুমারীর মৃতদেহ পাওয়া যায়, তাহার পূর্ব্ব রাত্রিতে আমিই সকলের শেষে সদর দরজা বন্ধ করিয়া আপন গৃহে গিয়া শয়ন করিয়াছিলাম। আমি যখন সদর দরজা বন্ধ করি, তখন বোধ হয়, রাত্রি বারটা। সেই সময় হরিকে দেখিতে পাই, সে তাহার মাতার গৃহের সম্মুখে বারান্দার উপর চুপ করিয়া বসিয়াছিল। ওরূপ সময় ওরূপ স্থানে আমি হরিকে ইতিপূর্ব্বে আর কখনও বসিতে দেখি নাই; সুতরাং আমার মনে একটু সন্দেহ হয়। মনে করি, বোধ হয়, তাহার কোনরূপ অসুখ হইয়া থাকিবে। এই ভাবিয়া আমি হরিকে জিজ্ঞাসা করি, “এমন সময় এরূপ ভাবে তুমি বাহিরে বসিয়া রহিয়াছ কেন?” আমার কথায় হরি কোনরূপ উত্তর প্রদান করে নাই; সুতরাং তাহার ব্যবহারে আমি একটু