পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
দারােগার দপ্তর, ৭৮ম সংখ্যা।

হইতে বহির্গত হইয়া যায়। যে সময় সে রাজকুমারীর গৃহ হইতে বহির্গত হইয়া যায়, সেই সময় তাহার হস্তে সাদা রুমাল, বা সাদা নেকড়ায় বাঁধা ছোটগোছের একটী পুঁটুলি ছিল। এখন আমার বেশ অনুমান হইতেছে যে, সেই পুঁটুলির মধ্যে রাজকুমারীর গৃহ হইতে অপহৃত অলঙ্কারগুলি ভিন্ন আর কিছুই ছিল না।

 সেই বাড়ীতে যতগুলি ভাড়াটিয়া ছিল, সকলেই কিছু না কিছু হরির বিপক্ষে বলিল। কেবলমাত্র প্রিয় কহিল,—“আমি ইহার কিছুই অবগত নহি, বা হরির বিপক্ষে আমি এ পর্য্যন্ত কোন কথা শুনি নাই।”

 আমরা ত্রৈলোক্যকে আর কোন কথা জিজ্ঞাসা করিলাম না। সাক্ষীগণ যেরূপ জবানবন্দী দিতে লাগিল, ত্রৈলোক্য সেই স্থানে বসিয়া স্থিরভাবে তাহা শ্রবণ করিতে লাগিল, এবং মধ্যে মধ্যে একটা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলিতে লাগিল।

 এইরূপে সমস্ত সাক্ষীর জবানবন্দী হইয়া গেল। তখন কর্ম্মচারী মাত্রেই এক বাক্যে বলিয়া উঠিলেন, “এখন এই মোকদ্দমার উদ্ধার হইল, এখন উত্তমরূপে জানিতে পারা গেল যে, এই হত্যা কাহার দ্বারা হইয়াছে। রাজকুমারীর গৃহ হইতে অপহৃত অলঙ্কার পাওয়া যাউক, বা না যাউক, এই সকল সাক্ষীর সাক্ষ্যে যে হরির ফাঁসি হইবে, তাহাতে আর কিছুমাত্র সন্দেহ নাই।”

 এ পর্য্যন্ত হরিও সেই স্থানে উপস্থিত থাকিয়া, সকল কথা শ্রবণ করিতেছিল। কর্ম্মচারীগণের কথা শেষ হইবার পর, আমি কহিলাম, “এখন আর হরিকে এরূপ ভাবে রাখা উচিত নহে। হত্যাকারীকে যেরূপ ভাবে রাখা হইয়া থাকে, ইহাকেও এখন সেইরূপ ভাবে রাখা কর্ত্তব্য।” >