বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
২৭

 আমার কথা শেষ হইবামাত্রই একজন কর্ম্মচারী উঠিয়া হরিকে ধরিলেন, ও তাহার হাতে হাতকড়ি পরাইলেন; তৎপরে বস্ত্র দ্বারা পুনরায় উত্তমরূপে বন্ধন করিয়া দুইজন প্রহরীর হস্তে তাহাকে অর্পণ করিলেন।

 হরির মুখ দিয়া কোন কথাই বাহির হইল না। কেবল তাহার চক্ষু দিয়া বেগে জলধারা বহিতে লাগিল, এবং সজলনয়নে মধ্যে মধ্যে এক একবার কেবল ত্রৈলোক্যের মুখের দিকে তাকাইয়া বলিতে লাগিল, “মা! আমি তোমার পায়ে হাত দিয়া দিব্য করিয়া বলিতে পারি, আমি ইহার কিছুই জানি না। রাজকুমারীকে আমি হত্যা করি নাই, বা তাহার অলঙ্কার-পত্র প্রভৃতি কোন দ্রব্যই আমি অপহরণ করি নাই। আমি সমস্ত রাত্রি বাড়ীতেই ছিলাম, একবারের নিমিত্ত আমি বাড়ীর বাহিরে গমন করি নাই।”

 আমরা হরির কথায় কর্ণপাতও করিলাম না। অধিকন্তু তাহাকে কহিলাম, রাজকুমারীর গহনাগুলি তুমি কোথায় রাখিয়া আসিয়াছ, তাহা এখনও বলিয়া দেও। নতুবা আমাদিগের হস্তে তোমার যন্ত্রণার শেষ থাকিবে না।”


তৃতীয় পরিচ্ছেদ।

 আমাদিগের এই সকল ব্যাপার দেখিয়া, ত্রৈলোক্য যে স্থানে বসিয়াছিল, সেই স্থান হইতে গাত্রোত্থান করিয়া, আমার পার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইল, এবং আমাকে কহিল, “আমি নির্জ্জনে আপনাকে দুই একটী কথা বলিতে চাহি।”