সেই সময় মৃত্যু হওয়ায়, আমি পুনরায় সেইরূপ কার্য্য করিতে একবারে অসহায় হইয়া পড়ি। এদিকে সেই পাড়ার লোকেই ক্রমে আমার চরিত্রের বিষয় অবগত হইয়া পড়ে; সুতরাং আমার কথায় আর কেহই বিশ্বাস করিত না। এমন কি আমার সঙ্গে অনেকেই বাক্যালাপ পর্য্যন্তও করিত না। তখন সেই স্থানে আর বাস করা যুক্তিযুক্ত নহে, বিবেচনা করিয়া, আমি আমার সমস্ত দ্রব্যসামগ্রী এবং আমার প্রাণের পুত্ত্র হরিকে লইয়া সেই স্থান পরিত্যাগ করি। পরিশেষে পাঁচুধোপানির গলির এই বাড়ীতে আসিয়া একখানি ঘর ভাড়া করিয়া লই। এই স্থানের কোন লোকেই আমাকে চিনিত না, বা কোন স্ত্রীলোকের সহিত আমার আলাপ-পরিচয়ও ছিল না। সুতরাং এই স্থানে এতদিবস আমি নির্ব্বিবাদে বাস করিয়া আসিতেছিলাম। আমি এই বাড়ীতে উঠিয়া আসিবার কিছুদিবস পরে, প্রিয় আসিয়াও এই বাড়ীতে একখানি ঘর ভাড়া লয়, এবং সেই পর্য্যন্ত সেও এই স্থানে অবস্থিতি করিতেছে। যে সময় প্রিয় এই বাড়ীতে উঠিয়া আইসে, সেই সময় হইতেই তাহার উপর কেমন আমার একটু ভালবাসা জন্মায়। পরে কিছুদিন থাকিতে থাকিতে প্রিয়ও আমাকে সবিশেষরূপ যত্ন করিতে আরম্ভ করে, এবং ক্রমে আমার সবিশেষ অনুগত হইয়া পড়ে।
“যে সময় আমি এই বাড়ীতে উঠিয়া আসিয়াছিলাম, সেই সময় আমার চলাচলের সবিশেষ কোন কষ্ট ছিল না। পূর্ব্বে নানারূপ অসৎ উপায়ে যে সকল অর্থ উপার্জ্জন করিয়াছিলাম, এখন পর্য্যন্তও তাহার কিছু অর্থ আমার নিকট ছিল; কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই সকল অর্থ ক্রমে নিঃশেষিত হইয়া গেল। পুনরায় আমার অর্থের প্রয়োজন হইতে লাগিল।