পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
৩১

 “এই বাড়ীতে যতগুলি স্ত্রীলােক আছে, তাহাদের সকলের অপেক্ষা রাজকুমারীই কিছু দরিদ্র ভাবে থাকিত; কিন্তু সকলের যাহা নাই, রাজকুমারীর তাহা ছিল। তাহার কতকগুলি উৎকৃষ্ট উৎকৃষ্ট সােণার অলঙ্কার ছিল। কিন্তু তাহার অধিকাংশই সে ব্যবহার করিত না, উহা তাহার বাক্সের মধ্যে প্রায়ই আবদ্ধ থাকিত।

 “সেইসকল অলঙ্কার দেখিয়া পর্য্যন্ত উহার উপর আমার অতিশয় লােভ হইল। কিরূপে সেই অলঙ্কারগুলি আমার হস্তগত হইতে পারে, সর্ব্বদা কেবল তাহারই চিন্তা করিতে লাগিলাম; কিন্তু মনের চিন্তা অধিক দিবস গােপনে রাখিতে পারিলাম না। কথায় কথায় একদিবস আমার মনের ভাব প্রিয়র নিকট প্রকাশ করিয়া ফেলিলাম। দেখিলাম, প্রিয়ও আমার ইচ্ছার অনুগামিনী হইল। তখন কিরূপ উপায়ে রাজকুমারীর অলঙ্কারগুলি অপহরণ করিতে সমর্থ হই, উভয়ে মিলিয়া তাহার পরামর্শ করিতে আরম্ভ করিলাম। পরিশেষে ইহা সাব্যস্ত হইল যে, উহাকে কোনরূপে অজ্ঞান করিয়া তাহার গহনাগুলি অপহরণ করিব। যেরূপ পরামর্শ হইল, কার্য্যেও তাহার সেইরূপ সংগ্রহ করিলাম; কিয়দ্দিন পরে ধুতুরার বীজ সংগ্রহ করিয়া তাহা উত্তমরূপে চূর্ণ করিয়া রাখিলাম।”

 আমি। ধুতুরার বীজ সংগ্রহ করিলে কিরূপে?

 ত্রৈলােক্য। আমার পূর্ব্ব বাসস্থান ছিল পাড়াগাঁয়ে; সুতরাং ধুতুরা যে কি জিনিষ, তাহা আমি বেশ জানি। উহার গুণ আমি অবগত আছি, এবং কোথায় যে উহা পাওয়া যায়, তাহাও আমার জানিতে বাকী নাই। একদিবস সহরের বাহিরে একখানি বাগানে কতকগুলি ধুতুরার গাছ দেখিতে পাই। উহা হইতে কয়েকটা ফল আনিয়া, তাহা চূর্ণ করিয়া আপন গৃহে রাখিয়া দি।