বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
দারোগার দপ্তর, ৭৮ম সংখ্যা।

 “উত্তরে রাজকুমারী কহিল, ‘কেন আমার কি কিছুই নাই যে, তোমাদিগকে কিছু আহার করিতে দিতে পারিব না? কি খাইতে চাও, বল না।’

 “আমি কহিলাম, ‘আর কিছুই খাইব না। অনেক দিন ফলার করি নাই, আজ মনটা বলিতেছে ফলার করি।’

 “এই বলিয়া প্রিয়কে কহিলাম, ‘বোন, দই-চিড়া ও কিছু মিষ্ট দ্রব্য যদি এখন খরিদ করিয়া আনিতে পার, তাহা হইলে খরিদ করিয়া আন না কেন। আমরা তিনজনেই এই স্থানে বসিয়া ফলার করিব এখন?’

 “আমার কথা শুনি রাজকুমারী গাত্রোত্থান করিল, এবং প্রিয়কে সেই স্থানে বসিতে বলিয়া কয়েকটী পয়সা লইয়া সে বাহিরে গমন করিল। আমরা তাহার গৃহে বসিয়া নানারূপ দুরভিসন্ধির উপায় স্থির করিতে লাগিলাম। সেই সময় বাড়ীর অপর আর কেহই জাগরিত ছিল না। কিয়ৎক্ষণ পরে রাজকুমারী কিছু চিড়া, দই ও মিষ্টান্নের সহিত প্রত্যাবর্ত্তন করিল। আমরা সেই সকল দ্রব্য দুইখানি পাত্রে রাখিয়া তাহাতেই আহারের বন্দোবস্ত করিলাম। একখানি পাত্রে রাজকুমারীকে দিলাম, সে সেই পাত্রে আহার করিতে লাগিল; আর একখানি পাত্রে আমি ও প্রিয় উভয়ে আহার করিতে বসিলাম। সেই সময় প্রিয় কহিল, ‘ফলারে মিষ্টতা কিছু কম হইয়াছে।’ প্রিয়র কথার উত্তরে আমি প্রিয়কে কহিলাম, ‘আমার এই চাবি লইয়া যাও, আলমারির ভিতর সন্দেশ ছিল, যদি থাকে, তাহা হইলে উহা আন।’

 “প্রিয় আমার অভিসন্ধি বুঝিতে পারিয়া আমার আলমারি হইতে বিষমিশ্রিত এবং বিষ-অমিশ্রিত সমুদায় সন্দেশ আনিয়া আমার নিকট রাখিয়া দিল। উহা হইতে যে সন্দেশে বিষমিশ্রিত ছিল না, তাহার