কিয়দংশ আমি গ্রহণ করিলাম, অবশিষ্ট প্রিয়কে দিলাম। আর যাহাতে বিষমিশ্রিত ছিল তাহা রাজকুমারীকে প্রদান করিলাম। রাজকুমারী তাহার কিয়ৎ পরিমাণে ভোজন করিল; খাইতে ভাল লাগিতেছে না বলিয়া সকল খাইয়া উঠিতে পারিল না। কিন্তু সে যাহা আহার করিল, তাহাতেই তাহার নেসা হইল; তবে একবারে হতজ্ঞান হইয়া পড়িল না।
“এই ব্যাপার দেখিয়া আমি প্রিয়াকে এক ছিলুম তামাকু সাজিতে কহিলাম। প্রিয় আমার দুরভিসন্ধি বুঝিতে পারিয়া তামাকুর পরিবর্ত্তে সিদ্ধি সাজিয়া আনিল। তামাকু বলিয়া রাজকুমারীকে সেই সিদ্ধির ধূমও পান করাইলাম; কিন্তু তাহাতেও রাজকুমারী একবারে সংজ্ঞাশূন্য হইয়া পড়িল না। আমার ইচ্ছা ছিল যে, রাজকুমারী অজ্ঞান হইয়া পড়িলে পর, উহার সমস্ত অলঙ্কার চুরি করিয়া লইব। কিন্তু সেও অজ্ঞান হইল না, আমিও আমার অভিলষিত উপায়ে তাহার অলঙ্কারগুলি হস্তগত করিতে সমর্থ হইলাম না। তখন আমি অনন্যোপায় হইয়া উহার বুকের উপর বসিয়া জোর করিয়া উহার গলা টিপিয়া ধরিলাম; প্রিয়কে কহিলাম, ‘উহার পা দুইখানি চাপিয়া ধর।’ প্রিয় তাহাই করিল, জোর করিয়া তাহার পা চাপিয়া ধরাতে রাজকুমারী আর জোর করিতে পারিল না। দেখিতে দেখিতে তাহার প্রাণবায়ু বাহির হইয়া গেল। তখন আমরা উহার সমস্ত অলঙ্কার বাহির করিয়া লইয়া উহার গৃহের দরজা ভেজাইয়া রাখিয়া উহার গৃহ হইতে বাহির হইয়া আসিলাম। আমার ইচ্ছা ছিল না যে, উহাকে হত্যা করিয়া উহার যথাসর্ব্বস্ব অপহরণ করিয়া লইব; কিন্তু কার্য্যের গতিতে এবং লোভের বশবর্ত্তী হইয়া, পরিশেষে আমি উহাকে হত্যা করিয়া ফেলিলাম।