পাতা:শেষ লীলা - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শেষ লীলা
৩৯

 অপরাপর কর্ম্মচারীগণ। মিথ্যা কথা। সেই আলমারি আমরা প্রত্যেকেই এক একবার করিয়া দেখিয়াছি। উহার ভিতর সেই সকল অলঙ্কার কোনরূপেই থাকিতে পারে না।

 ত্রৈলোক্য। পারে না পারে, তাহা লইয়া তর্ক করিবার প্রয়োজন নাই। আপনারে আমার সঙ্গে আসুন, দেখুন, সেই আলমারির ভিতর হইতে রাজকুমারীর সমস্ত অলঙ্কার আমি বাহির করিয়া দিতে পারি কি না।

 এই বলিয়া ত্রৈলোক্য আমাদিগের সকলের সমভিব্যাহারে তাহার গৃহের ভিতর প্রবেশ করিল এবং আমাদিগকে কহিল “যে স্থানে আলমারিটী স্থাপিত আছে, সেই স্থান হইতে উহা একটু সম্মুখের দিকে সরাইয়া দিন।” এই কথা বলিবামাত্র, সেই আলমারি আমার প্রায় এক হস্ত সম্মুখ ভাগে সরাইয়া দিলাম। ত্রৈলোক্য সেই আলমারির পশ্চাৎ ভাগে গমন করিয়া, উহার পশ্চাদ্‌ভাগে যে একটী দেরাজের মত অংশ ছিল, তাহা খুলিয়া, তাহার মধ্য হইতে রাজকুমারীর সমস্ত অলঙ্কারগুলি বাহির করিল, এবং আমাদিগের হস্তে প্রদান করিল। এই ব্যাপার দেখিয়া কর্ম্মচারী মাত্রেই, একবারে বিস্মিত হইয়া পড়িলেন; কারণ তাঁহারা প্রত্যেকেই সেই আলমারি এক একবার অনুসন্ধান করিয়াছিলেন।

 সেই আলমারির ভিতর হইতে কর্ম্মচারীগণ যে সেই সকল অলঙ্কার পূর্ব্বে বাহির করিতে পারেন নাই, তাহাতে তাঁহাদিগের কিছু মাত্র দোষ ছিল না। কারণ সেই আলমারির গঠন স্বতন্ত্ররূপ ছিল। আলমারির সর্ব্ব-উপরিস্থিত তক্তার ছয় ইঞ্চি নিম্নে, অথচ কার্ণিসের ভিতরে আর একখানি তক্তা এরূপ ভাবে বসান ছিল যে, ভিতর হইতে দেখিলে বোধ হইত, সেই তক্তা খানিই আলমারির