পাতা:শেষ সপ্তক-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রশ্ন

দেহের মধ্যে বন্দী প্রাণের ব্যাকুল চঞ্চলতা
দেহের দেহলীতে জাগায় দেহের-অতীত কথা।
খাঁচার পাখি যে বাণী কয়
সে তো কেবল খাঁচারই নয়,
তারি মধ্যে করুণ ভাষায় সুদূর অগােচর
বিস্মরণের ছায়ায় আনে অরণ্যমর্মর।

চোখের দেখা নয় তাে কেবল দেখারই জাল বােনা,
কোন্ অলক্ষ্যে ছাড়িয়ে সে যায় সকল দেখাশােনা।
শীতের রৌদ্রে মাঠের শেষে
দেশ-হারানাে কোন্ সে দেশে
বসুন্ধরা তাকিয়ে থাকে নিমেষ-হারা চোখে
দিগবলয়ের ইঙ্গিতলীন উধাও কল্পলােকে।

ভালােমন্দে বিকীর্ণ এই দীর্ঘ পথের বুকে
রাত্রদিনের যাত্রা চলে কত দুঃখে সুখে।
পথের লক্ষ্য পথ-চলাতেই
শেষ হবে কি? আর কিছু নেই?
দিগন্তে যার স্বর্ণ লিখন, সংগীতের আহ্বান,
নিরর্থকের গহ্বরে তার হঠাৎ অবসান?

১৯৫