পাতা:শেষ সপ্তক-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শেষ সপ্তক

অমিতা যখন সুমিতাকে পায় তখন সে চরিতার্থ হয়। ছবিতে যে আনন্দ সে হচ্ছে সুপরিমিতির আনন্দ। রেখার সংযমে সুনির্দিষ্টকে সুস্পষ্ট করে দেখি, মন বলে ওঠে ‘নিশ্চিত দেখতে পেলুম’—তা সে যাকেই দেখি না কেন, এক-টুকরো, পাথর, একটা গাধা, একটা কাঁটাগাছ, একজন বুড়ি, যাই হোক। নিশ্চিত দেখতে পাই যেখানেই, সেখানেই অসীমকে স্পর্শ করি, আনন্দিত হয়ে উঠি। তাই বলে এ কথা ভুললে চলবে না যে, তোমার চা খুব ভালো লেগেছে। ইতি ১৩ অগ্রহায়ণ ১৩৩৫

শেষ সপ্তকের তেইশ ও চৌত্রিশ সংখ্যক কবিতার সহিত প্রান্তিক (১৩৪৪) গ্রন্থের পনেরো ও ষোলো সংখ্যক কবিতা তুলনীয়। ছন্দোবদ্ধ ঐ দুটি কবিতার রচনা যথাক্রমে ১৩।৯।১৯৩৪ [২৭ ভাদ্র ১৩৪১] ও ৭ বৈশাখ ১৩৪১ তারিখে, ফলতঃ শেষ সপ্তক -ধৃত কবিতার পূর্বেই মনে হয়। শেষ সপ্তকের সাতাশসংখ্যক কবিতার ছন্দোবদ্ধ পূর্বতন একটি রূপ ‘সংযোজন’ অংশে (ঘট ভরা, পৃ ১৯৩) মুদ্রিত। এ স্থলে পাণ্ডুলিপি -ধৃত অন্য একটি পাঠ সংকলিত হইল—

আমার এই ছোটো কলস পেতে রাখি
ঝরনাধারার নীচে।
সকালবেলায় বসে থাকি
শেওলা-ঢাকা পিছল কালো পাথরটাতে
পা ঝুলিয়ে।
ঘট ভরে যায় এক নিমেষে,
ফেনিয়ে ওঠে ছল্‌ছলিয়ে,
ছাপিয়ে পড়ে বারে বারে,
সেই খেলা ও আমার মনের খেলা।

সবুজ দিয়ে মিনে-করা
পাহাড়তলির নীল আকাশে
ঝর্‌ঝরানি উছলে ওঠে দিনে রাতে।