পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
দ্বিতীয় দৃশ্য

 বিধু। না দিদি, আমাদের মধুরালাপ লোকালয় থেকে অনেক দূরে গিয়েই ক’র্‌তে হবে, নইলে সবাই দেবে। ওগো, এসো—ছাতে এসো, গোটাকতক কথা বলে’ বাখি। তুমি আবার নাকি হঠাৎ কাল লঙ্কাদ্বীপে যাচ্চ—এখানকার হাওয়া তোমাব সহ্য হচ্ছে না।

উভয়ের প্রস্থান।

সতীশের প্রবেশ

 সতীশ। জেঠাইমা!

 জেঠাইমা। কি বাপ।

 সতীশ। বাবা কাল ভোরে জাহাজে করে’ কলম্বো যাবেন, তাই কালই লাহিড়ি সাহেবের ছেলেকে মা চা খাওয়াতে ডেকেছেন, তুমি যেন সেখানে হঠাৎ গিয়ে পোড়ো না।

 জেঠাইমা। আমার যাবার দরকার কি, সতীশ!

 সতীশ। যদি যাও তো তোমার এ কাপড়ে চ’ল্‌বে না, তোমাকে—

 জেঠাইমা। সতীশ, তোর কোনো ভয় নেই, আমি এই ঘরেই থাক্‌বো, যতক্ষণ তোর বন্ধুর চা খাওয়া না হয়, আমি বা’র হবো না।

 সতীশ। জেঠাইমা, আমি মনে ক’র্‌ছি, তোমার ওই সামনের ঘরটাতেই তাকে চা খাওয়াবার বন্দোবস্ত ক’র্‌বো। এ বাড়িতে আমাদের যে ঠাসাঠাসি লোক—চা খাবার, ডিনার খাবার মতো ঘর একটাও খালি পাবার জো নেই। মা’র শোবার ঘরে সিন্দুক্ ফিন্দুক্ কত কি র’য়েচে, সেখানে কাকেও নিয়ে যেতে লজ্জা করে।

 জেঠাইমা। আমারও ঘরে তো জিনিষপত্র—

 সতীশ। ওগুলো বা’র করে’ দিতে হবে। বিশেষত তোমাব ঐ বঁটি চুপ্‌ড়ি বারকোশগুলো কোথাও না লুকিয়ে রাখ লে চ’ল্‌বে না।

[ ২৫