পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
দ্বিতীয় দৃশ্য

ঘাড়ে প’ড়বে। একে একজামিনে ফেল ক’রেছি, তার উপর দেনা, এর উপরে জেলে যাবার এত বড়ো সুযোগটা যদি মাটি হ’য়ে যায়, তবে বাবা আমার সে অপরাধ মাপ ক’র্‌বেন না।

 বিধু। সত্য দিদি। সতীশ মেসোর টাকা নিয়েচে শুন্‌লে তিনি বোধ হয় ওকে বাড়ি থেকে বা’র ক’রে দেবেন।

 সুকুমারী। তা দিন না। আর কি কোথাও বাড়ি নেই না কি? ও বিধু, সতীশকে তুই আমাকেই দিয়ে দে না। আমার তো ছেলেপুলে নেই, আমিই না হয় ওকে মানুষ করি? কি বলো গো?

 শশধর। সে তো ভালোই। কিন্তু সতীশ যে বাঘের বাচ্চা, ওকে টান্‌তে গেলে তার মুখ থেকে প্রাণ বাঁচান দায় হবে।

 সুকুমারী। বাঘ মশায় তো বাচ্ছাটিকে জেলের পেয়াদার হাতেই সমর্পণ করে’ দিয়েছেন, আমরা যদি তাকে বাঁচিয়ে নিয়ে যাই, এখন তিনি কোনো কথা বলতে পারবেন না।

 শশধর। বাঘিনী কি বলেন, বাচ্ছাই বা কি বলে?

 সুকুমারী। যা বলে, আমি জানি, সে-কথা আর জিজ্ঞাসা করতে হবে না। তুমি এখন দেনাটা শোধ করে’ দাও।

 বিধু। দিদি।

 সুকুমারী। আর দিদি দিদি করে’ কাঁদতে হবে না। চল তোর চুল বেঁধে দিই গে। এমন ছিরি করে’ তোর ভগ্নীপতির সাম্‌নে বা’র হতে লজ্জা করে না?

শশধর ব্যতীত সকলের প্রস্থান

মন্মথের প্রবেশ

 শশধর। মন্মথ, ভাই, তুমি একটু বিবেচনা করে’ দেখো—

৩৪ ]