পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ বােধ
তৃতীয় দৃশ্য

 সতীশ। তবে দাও, তাই দাও। যদি আমার অন্তরের কথাটা বুঝে থাকো, তা’হলে—

 নলিনী। থাক থাক অন্তরের কথা অন্দরমহলেই থাক। নেকলেস্‌টা এই নিয়ে যাও।

 সতীশ। (হাতে লইয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া) সেই ভালো, তবে যাই। (কিছু দূর গিয়া ফিরিয়া আসিয়া) দয়া করো নেলি, দয়া করো—যদি আমাকে ফিরিয়ে নিতে হয়, তবে ওটা গলায় ফাঁস লাগিয়ে দম বন্ধ ক’রে আমার পক্ষে মরা ভালো।

 নলিনী। দেনা তুমি শোধ ক’রবে কি করে’?

 সতীশ। মা’র কাছ থেকে টাকা পাবো।

 নলিনী। ছি ছি, তিনি মনে ক’রবেন, অমার জন্যই তাঁর ছেলের দেনা হ’চ্চে। সতীশ, তোমার এই নেকলেসটা হতে করে’ নেওয়ার চেয়ে ঢের বেশি করে’ নিয়েচি, এই কথাটা তোমাকে বুঝে দেখ্‌তে হবে। নইলে কখনই তোমাকে ফিরিয়ে দিতে পার্‌তুম না। দিলে অপমান করা হ’তো! বুঝতে পার্‌চো?

 সতীশ। সম্পূর্ণ না।

 নলিনী। তোমার দান করাকেই আমি বেশি মান দিযেছি বলেই তোমাব দানের জিনিষকে অনায়াসে ত্যাগ ক’র্‌তে পাবি। মনে করো না, এটা হারিয়ে গেছে, সেই হারানোতে তোমাব দান তো একটুও হারায় না।

 সতীশ। ঠিক ব’ল্‌চো, নেলি?

 নলিনী। ঠিক ব’ল্‌চি। আমি যেমন সহজে এটি তোমার হাতে ফিরিয়ে দিচ্চি, তেমনি সহজে তুমি এটি আমার হাত থেকে ফিরে নাও। তা’হলে আমি ভারি খুসি হবো।

88]