পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
চতুর্থ দৃশ্য

 সতীশ। সে তো ঠিক কথা। আমি জান্‌তে চাই, তুমি দারিদ্র্যকে ঘৃণা করো কি না?

 নলিনী। খুব করি, যদি সে দারিদ্র্য মিথ্যার দ্বারা নিজেকে ঢাকতে চেষ্টা কবে।

 সতীশ। নেলি, তুমি কি কখনো তোমার চিরকালের অভ্যস্ত আরাম ছেড়ে গরীবের ঘরের লক্ষ্মী হ’তে পারবে?

 নলিনী। নভেলে যে রকম ব্যারামের কথা পড়া যায়, সেটা তেমন করে চেপে ধরলে আরাম আপনি ঘরছাড়া হয়।

 সতীশ। সে ব্যারামের কোনো লক্ষণ কি তোমার—

 নলিনী। সতীশ, তুমি কখনো কোনো পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হ’তে পারলে না। স্বয়ং নন্দী সাহেবও বোধ হয় অমন প্রশ্ন তুলতেন না। তোমাদের এক চুলও প্রশ্রয় দেওয়া চলে না।

 সতীশ। তোমাকে আমি আজও চিন্‌তে পারলেম না নেলি।

 নলিনী। চিন্‌বে কেমন করে’? আমি তো তোমার হাল ফেশানের টাই নই—কলার নই—দিনরাত যা নিয়ে ভাবো, তাই তুমি চেনো।

 সতীশ। আমি হাত যোড় করে’ ব’ল্‌চি নেলি, তুমি আজ আমাকে এমন কথা ব’লো না। আমি যে কি নিয়ে ভাবি, তা তুমি নিশ্চয় জানো।

 নলিনী। ঐ যে বাবা ডাকচেন। তাঁর কাজ হ’য়ে গেছে। যাই!

উভয়ের প্রস্থান।

সুকুমারী ও শশধরের প্রবেশ

 সুকুমারী। দেখ, তোমাকে জানিয়ে রাখ্‌চি, আমার হরেনকে মার্‌বার জন্যেই ওরা মায়ে পোয়ে উঠে পড়ে লেগেছে।

[ ৬৩