পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
পঞ্চম দৃশ্য

 সুকুমারী। রইলো। সে তো বরাবরই ঐ রকম লম্বা-চৌড়া কথা বলে’ থাকে। তুমি বুঝি সেই ভরসায় পথ চেয়ে বসে’ আছো।

 শশধর। এত দিন তো ভরসা ছিলো, তুমি যদি পরামর্শ দাও তো সেটা বিসর্জ্জন দিই।

 সুকুমারী। দিলে তোমার বেশী লোক্‌সান হবে না, এই পর্য্যন্ত বল্‌তে পারি। ঐ যে তোমার সতীশ বাবু আস্‌ছেন। আমি যাই।

সতীশের প্রবেশ

 সতীশ। মাসিমা, পালাতে হবে না, এই দেখ, আমার হাতে অস্ত্র-শস্ত্র কিছুই নেই—কেবল খান কয়েক নোট আছে!

 শশধর। ইস্, এ যে এক তাড়া নোট। যদি আপিসের টাকা হয় তো এমন করে, সঙ্গে নিয়ে বেড়ানো ভালো হচ্চে না, সতীশ।

 সতীশ। আর সঙ্গে নিয়ে বেড়াব না। মাসিমাব পায়ে বিসর্জ্জন দিলাম। প্রণাম হই মাসিমা! বিস্তর অনুগ্রহ ক’রেছিলে, তখন তার হিসাব রাখ্‌তে হবে মনেও করিনি, সুতরা পরিশোধের অঙ্কে কিছু ভুলচুক্ হতে পারে! এই পনরো হাজার টাকা গুণে নাও। তোমার হরেনের পোলাও-পরমান্নে একটি তণ্ডুলকণাও কম না পড়ুক্।

 শশধর। এ কি কাণ্ড সতীশ! এত টাকা কোথায় পেলে?

 সতীশ। আমি গুণচট আজ ছয়মাস আগাম খরিদ করে’ রেখেচি—ইতিমধ্যে দর চড়েছে, তাই মুনাফা পেয়েছি।

 শশধর। সতীশ, এ যে জুয়োখেলা!

 সতীশ। খেলা এইখানেই শেষ, আর দরকার হবে না।

 শশধর। তোমার এ টাকা তুমি নিয়ে যাও, আমি চাই না।

৭২]