পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
পঞ্চম দৃশ্য

 সতীশ। তোমাকে তো দিই নি মেসোমশায়! এ মাসিমার ঋণ শোধ,তোমার ঋণ কোনকালে শোধ ক’র্‌তে পার্‌বো না।

 শশধর। কি সুকু, এ টাকাগুলো—

 সুকুমারী। গুণে খাতাঞ্জির হাতে দাও না, ঐখানেই কি ছড়ানো পড়ে’ থাক্‌বে? (নোটগুলি তুলিয়া গুণিয়া দেখা)

 শশধর। সতীশ, খেয়ে এসেছ তো?

 সতীশ। বাড়ি গিয়ে খাবো।

 শশধর। আাঁ, সে কি কথা! বেলা যে বিস্তর হ’য়েছে। আজ এইখানেই খেয়ে যাও।

 সতীশ। আর খাওয়া নয় মেসোমশায়। এক দফা শোধ ক’রলেম, অন্নঋণ আর নূতন করে’ ফাঁদ্‌তে পার্‌বো না।

প্রস্থান।

 সুকুমারী। বাপের হাত থেকে রক্ষা করে’ এত দিন ওকে খাইয়ে পরিয়ে মানুষ ক’র্‌লেম, আজ হাতে দু’পয়সা আস্‌তেই ভাবখানা দেখেছো। কৃতজ্ঞতা এমনই বটে! ঘোর কলি কি না!

উভয়ের প্রস্থান।

সতীশের প্রবেশ

 সতীশ। এই পিস্তলে দু’টি গুলি পূরেচি—এই যথেষ্ট! আমার অন্তিমের প্রেয়সী। ও কে ও? হরেন! কী ক’র্‌ছিস্? এই সন্ধ্যার সময় বাগানে অন্ধকার যে, চারদিকে কেউ নেই—পালা, পালা, পালা। (কপালে আঘাত করিয়া) সতীশ, কি ভাবচিস্ তুই—ওরে সর্ব্বনেশে, চুপ্ চুপ্—না, না, না, এ কী বক্‌চি? আমি কি পাগল হ’য়ে গেলুম?—

[ ৭৩