পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অধ
শােধ-বােধ
পঞ্চম দৃশ্য

 নলিনী। এর মানে কি? এ চিঠি তুমি আমাকে কেন লিখেচো?

 সতীশ। মানে যেমন বুঝেছিলে, সেইটেই ঠিক। আমি তোমাকে প্রতারণা করে’ চিঠি লিখি নি। তবে আমার ভাগ্যক্রমে সকলি উল্টো হয়। তুমি মনে ক’রতে পার, তোমার দয়া উদ্রেক ক’রবার জন্যই আমি—কিন্তু মেসোমশায় সাক্ষী আছেন, আমি অভিনয় ক’রছিলেম না—তবু যদি বিশ্বাস না হয়, প্রতিজ্ঞা রক্ষা ক’রবার এখনো সময় আছে।

 নলিনী। কি তুমি পাগলের মতো ব’কচো? আমি তোমার কী অপরাধ করেছি যে, তুমি আমাকে এমন নিষ্ঠুরভাবে—

 সতীশ। যে জন্য আমি এই সঙ্কল্প ক’রেছি, সে তুমি জান, নলিনী—আমি তো একবর্ণও গোপন করিনি, তবে কী আমার উপর শ্রদ্ধা আছে?

 নলিনী। শ্রদ্ধা। সতীশ, তোমার উপর ঐ জন্যই আমার রাগ ধরে। শ্রদ্ধা—ছি, ছি, শ্রদ্ধা তো পৃথিবীতে অনেকেই অনেককে করে। তুমি যে কাজ ক’রেছো, আমিও তাই ক’রেছি—তোমাতে আমাতে কোন ভেদ রাখিনি। এই দেখ, আমার গহনাগুলি সব এনেচি—এগুলো এখনো আমার সম্পত্তি নয়—এগুলি আমার বাপমায়ের। আমি তাঁদের না ব’লে’ চুরি ক’রেই এনেচি, এর কত দাম হ’তে পারে, আমি কিছুই জানিনে, কিন্তু এ দিয়ে কি তোমার উদ্ধার হবে না।

 শশধর। উদ্ধার হবে, এই গহনাগুলিব সঙ্গে আরো অমূল্য যে ধনটি দিয়েচ, তা দিয়েই সতীশের উদ্ধার হবে।

[ ৭৭