পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামল ও কাজল চাপে চুর্ণ হইয়া গিয়াছে। কিন্তু সেই অমল ধবল, রক্ত অধরাপল্লবযুক্ত, সুন্দর কিশোর মুখখানি তেমনই আছে। আয়ত লোচন দু’টি মুদিত, যেন আর ক্লেশ নাই,-ৰ্তাহার জীবনের সকল জালা জুড়াইয়াছে। তাহার দেবতুল্য মুখে স্বর্গের প্রসন্নতা। সেই সুকুমার দগ্ধ দেহ বাহির করার পর চতুর্দিক ক্ৰন্দন ও শোকোচ্ছাসে যেন ফাটিয়া পড়িল। এক বৃদ্ধ সন্ত্রান্ত ব্যক্তি, স্বর্ণভূষণ বৰ্ষিয়সী এক মহিলা ও একটি সুন্দরী তরুণী তথায় উন্মত্তের মত ছুটিয়া আসিয়া তিন জনেই সেখানে মূচ্ছিত হইয়া পড়িলেন ; শত্রুসৈন্যরাও সেই করুণ দৃশ্য দেখিয়া হাতিয়ার ফেলিয়া স্তব্ধ হইয়া দাড়াইয়া রহিল। এ মৃত কে ? ইনি যুবরাজ বিশ্বনাথ, সাভারের ভাবী রাজা, র্তাহার পার্শ্বে রাজা মহেন্দ্ৰ সেন, রাজ-মহিষী ও যুবরাজপত্নী-এই তিনজন মূচ্ছিত। এই শোচনীয় সংবাদ শত্রু-শিবিরে পৌছিল। সেনাপতি শৈবাল রায়, যুবরাজ ও শ্যামলকে লইয়া তথায় উপস্থিত হইলেন। সাভারের রাজকুমারের এই দশা দেখিয়া বাজাসনের যুবরাজের চক্ষে ঝরু ঝাবু করিয়া জল পড়িতে লাগিল। তিনি গদগদ কণ্ঠে বলিলেন—“মহারাজ, এই অহিতকর, একান্ত অশুভ যুদ্ধ থামাইয়া দিন, আমি পিতা মহারাজকে দিয়া তাহাতে সম্মতি লওয়াইব ।” যুবরাজ পুনরায় বলিলেন,-“আজি হইতে একাদশ দিন যুদ্ধ স্থগিত থাকুক। ইহার মধ্যে যদি সাভারের সৈন্যরা যুদ্ধ করিতে চায়, কিংবা আমাদের উপর বাণ বা গুলি বর্ষণ করে, তবে তোমরা দাড়াইয়া মরিবে, কিন্তু হাতিয়ার গ্রহণ করিতে পরিবে না।” > a\う