পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামল ও কাজল তাহার চােখ দুটি নিম্ন দৃষ্টি হইয়া স্ট্সে আমাকে দেখিতেছিল, . যেন আমার প্রাণের সহিত তাহার প্রাণের গোপন কথা চলিতেছিল! সে কথা তো তখন বুঝি নাই! এখন বুঝিতেছি, তিনি আমার কত প্রিয়, কত অন্তরঙ্গ ছিলেন।” । বলিতে বলিতে শু্যামল তাহার মায়ের চিঠিখানি বাহির করিয়া কঁাদিতে লাগিল,-“এই দেখ, আমার মায়ের হাতের অক্ষর। তিনি যেমন সুন্দরী ছিলেন, লেখাগুলিও তেমনই সুন্দর ছিল। মৃত্যুর কিছু পূর্বে লেখা, না খাইয়া, না ঘুমাইয়া, উৎকট জরের প্রকোপের সময় লেখা এই সুদীর্ঘ চিঠির একটি অক্ষরের . রেখা বাকিয়া যায় নাই, হেলে নাই! তুমি কি জান, এই চিঠি আমার মুমূর্ষু মাতা লিখিয়াছেন,-ইহা তাহার আত্মিক সংবাদ, তাহার সমস্ত মাতৃহৃদয়ের স্নেহসারে নিদারুণ উৎকণ্ঠায় ইহা লেখা, নির্বাণের পূর্বে প্ৰদীপ যেরূপ উজ্জল হইয়া জ্বলিয়া উঠে, সে শিখায় দৌৰ্ব্বল্যের কোন চিহ্ন থাকে না,-মায়ের এই আশীৰ্বাদী চিঠিখানি সেইরূপ সমস্ত মাতৃহৃদয়ের স্নেহ-বলে বলীয়ান। তাই এই দীর্ঘ বাইশ বৎসর পরেও আজকার লেখার মত উজ্জল হইয়া স্বাছে, তাই এই লেখায় স্বাস্থ্যের অনাবিল পূর্ণতা, অক্ষর সুস্পষ্ট, সবল, রেখাগুলি সতেজ, সুগঠিত ও সুদৰ্শন।” কজ্জল বলিল,-“আর কঁাদিও না। দেশে যাইয়া তােমার মাতার স্মৃতি-মন্দির রচনা করিয়া আমরা তঁহার পূজারী হইব।” —“না, কজ্জল, আমার মন যেন বলিতেছে, ভোগসুখ আমার কপালে নাই। তোমাকে বড় দুর্লভ বোধ হইতেছে। । SVG