পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামল ও কাজল হইয়াছিলেন। বাহিরে অবশ্যই তঁাহার চরিত্রহীনতা সম্বন্ধে নানারূপ কুৎসা প্রচারিত ছিল, কিন্তু রাজবাড়ীর লোকেরা তাহা বিশ্বাস করিত না । বিধবা বউরাণীর প্রতি মহারাণীর বিরূপতা * বাড়িয়া গিয়াছিল। এমন কি, যুবরাজের অকাল মৃত্যুর জন্য তিনি তঁহাকেই দায়ী করিতেন এবং তজ্জন্য র্তাহাকে অপয়া মনে করিতেন। বিধবা রাণী প্রায়ই তথ্যাগতের একখানি মূৰ্ত্তির পাশে বসিয়া ধ্যান ধারণা করিতেন ; সেখানে বজ্ৰধ্বজ উকি ঝুকি মারিয়া তঁহাকে বিরক্ত করিতেন। এদিকে তিনি মহারাণীকে আসিয়া বলিতেন,-“বিধবা রাণীর হিন্দুর ছোয়াচে রোগ এখনও পূরামাত্রায়ই আছে, আমাকে তঁাহার মন্দিরের পার্শ্বে দেখিলেই তিনি চটিয়া উঠেন ।” এইরূপ ব্যবহার ক্ৰমে দুঃসহ হইয়া উঠিল । রাজপ্রাসাদের ভিন্ন মহালের ভিন্ন সিড়ি থাকা স্বত্ত্বেও মন্ত্রী মৃত যুবরাজের অন্দর বাড়ীর উপর-তলায় সিড়ি দিয়া দোতলায় যাতায়াত করিতে লাগিলেন। কোন সময় বিধবা বউরাণীর আঁচলের সঙ্গে তাহার সংস্পৰ্শ ঘটিত, স্বর্ণমঞ্জরীর চক্ষু আরক্ত হইত এবং পরীক্ষণেই তাহ অশ্রুসিক্ত হইয়া উঠিত। যেখানে ছোটরাণী ও স্বর্ণমঞ্জরী একত্ৰ বসিয়া কথোপকথন করিতেন, মন্ত্রী সহসা বিধবা রাণীর গা ঘোঁসিয়া তথায় দাড়াইতে যাইতেন । বিরক্তির সহিত তিনি স্থান ত্যাগ করিলে আমনই মন্ত্রী যাইয়। মহাবাণীকে বলিতেন,-“আমি কৈবৰ্ত্ত বলিয়া ইনি সকলের সম্মুখে আমাকে যেরূপ অবজ্ঞা করেন, তাহাতে রাজবাড়ীর অন্দর মহলে প্ৰবেশ আমার পক্ষে অসম্ভব হইয়া পড়িয়াছে।” و ۹