নািতন রাপের প্রবর্তন করিয়াছিলেন, শরৎচন্দ্ৰও তেমনি গদ্য-সাহিত্যে এক অভিনব রােপ দিয়া গিয়াছেন। এই সভাক্ষেত্রে ভারতচন্দ্র সম্পবন্ধেও কিছ বলিবার অধিকার আমি সপধা আমার নাই। তাহা বলিবার বিশেষ প্রয়োজন আছে, এমনও আমি মনে করি না; কারণ, কালের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ সমালোচক পথিবীতে আর কেহ নাই; সেই কালের বিচারে নিণীত হইয়া গিয়াছে যে, ভারতচন্দ্রই প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যের শেষ সব প্রধান কবি। বাস্তবিক, ছন্দের পারিপাটো, শবদ-চয়নের চাতুন্যে ও গলপ-সাজাইবার নৈপণ্যে তিনি যে শক্তির পরিচয় প্রদান করিয়াছিলেন, প্রাচীন বঙ্গসাহিত্যে তাহার তুলনা বিরল। তাঁহার রচনা হইতে যত বেশী বাক্যকে বাঙালী প্রবাদবাক্যরাপে ব্যবহার করিয়া থাকে, তেমন আর কাহারও রচনা হইতে করে না। দেবানন্দপাের ভারতচন্দ্রের জন্মস্থান না হইলেও ইহার সহিত তাঁহার কম-জীবনের সম্পবিন্ধ জড়িত হইয়া আছে। ভারতচন্দ্র এই স্থানে অবস্থান করিয়া পারসী ভাষায় বিদ্যা অজািন করিয়াছিলেন। এই স্থানেই তাঁহার সাহিত্য-সাধনার সত্রপাত হয়। ১১৩৪ সালে এই গ্রামে বসিয়াই তিনি তাঁহার প্রথম রচনা সমাপ্ত(৪) করিয়াছিলেন। তাঁহার অমর লেখনীর মধ্যে আছে-“দেবের আনন্দ-ধাম, দেবানন্দপাের নাম।” বতমান কালে দেবানন্দ পাের বাঙালীর আনন্দ-ধামে পরিণত হইতে পরিবে কি না, জানি না। কিন্তু কামনা করি।--ক্ষ-দ্র ও অপ্ৰসিদ্ধ কাঁটালপাড়া গ্রাম বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মস্থান বলিয়া আজ যেরপে দেশ-প্ৰসিদ্ধ ও বাঙালীর তীৰ্থস্থানে পরিণত হইয়াছে, শরৎচন্দ্র ও ভারতচন্দ্রের পণ্য-সমতির সহিত জড়িত এই দেবানন্দ পােরও সেইরােপ বাঙালীর হৃদয় অধিকার করিয়া থাকুক—এখানে প্রতি বৎসর দলে দলে বাঙালী আসিয়া তাঁহাদের সমতি-পাজার অনষ্ঠানে যোগদান করােক—বাষিক উৎসবে ইহা পরিণত হউক । এক বৎসর অতীত হইল। আমরা শরৎচন্দ্রকে হারাইয়াছি। সেই শোচনীয় দিবস সমরণ করিয়া তাঁহার ও সেই সঙ্গে ভারতচন্দ্রের নামে (8) সত্যনারায়ণের ব্ৰতকথা । ya
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/২৩
অবয়ব