তাঁহাদিগকে অখন্ড ভারতের মহত্তর আদশের পথ হইতে বিচলিত করিতে পারে নাই। তাই তাঁহারা সকলের বিশ্বাসভাজন এবং শ্রদ্ধার পাত্র হইয়াছিলেন। রাজনীতির ক্ষেত্রেও বাঙালীরা চিরকাল ভারতের কথাই চিন্তা করিয়াছেন, প্রদেশের সখে-সবিধার উন্ধের্ব দেশের সবাধীনতাকেই তাঁহারা স্থান দিয়াছেন। বিদ্যা বিতরণের ক্ষেত্রে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমদার সর্বজনীন নীতির উল্লেখ পাবেই করিয়াছি। যে কোনো অবস্থাতেই হউক না কেন, ঐক্য ও অখন্ডতার সেই বাহৎ আদর্শ হইতে আমরা কখনোই বিচুত হইব না। সাময়িক সবার্থের প্রলোভনে চিরন্তন মঙ্গলের পথ রদ্ধ হইতে দিব না। আমাদের জাতীয় ভাষা ও সাহিত্য সম্পবন্ধে এই কথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য। কুটিল। রাজনীতি জনসাধারণের মধ্যে বিভেদ সন্টি করিবার জন্য সবােত্রই একবার করিয়া ঘা মারিয়া যাইতেছে। দবােল স্থানে তাহা বেশ জোরেই লাগিতেছে। হিন্দীকে বিকৃত করিবার যে অপচেন্টা চলিতেছে এবং অল-ইন্ডিয়া রেডিওর সাহায্যে তাহা যে ক্রমশ ব্যাপক এবং বধিত করা হইতেছে, তাহা আপনারা অবগত আছেন। এদিকে লেখ্য হিন্দী ভাষায় উদ হরফের ব্যবহার কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়ায়, ঐ অপচেন্টার ক্ষেত্র আরও উবর হইল। আমরা কি নিশ্চেন্ট নিরািত্তরে এই অত্যাচার সহ্য করিয়া লইব ? বাঙলা ভাষালক্ষীর অঙ্গনেও ভেদনীতির অঙ্কুর বপনের কাজ আরম্ভ হইয়াছে। অবিলম্বে তাহাকে উৎপাটন করিয়া না ফেলিলে বিষবক্ষ ডালপালা মেলিয়া সমগ্ৰ দেশকে আব্বত আচ্ছন্ন করিয়া ফেলিবে। বাঙলার এই দরবস্থা দেখিয়া রবীন্দ্রনাথ আক্ষেপ করিয়া বলিয়াছিলেন, “আজি হিন্দৰ-মাসলমানে যে একটা লজাজনক আড়াআড়ি দেশকে আত্মঘাতে প্রবত্ত করছে তার মালেও আছে সব দেশব্যাপী আবদ্ধি। অলক্ষী সেই অশিক্ষিত অবদ্ধির সাহায্যেই আমাদের ভাগ্যের ভিত্তি ভাঙবার কাজে চর লাগিয়েছে, আত্মীয়কে তুলছে শত্র করে, বিধাতাকে করছে আমাদের বিপক্ষ। শেষকালে নিজের সবনাশ করবার জেদ এতদর পর্যন্ত আজ এগোেল যে, বাঙালী হয়ে বাঙলা ভাষার মধ্যেও ফাটল ধরাবার চেন্টা আজ সম্ভবপর হয়েছে; শিক্ষার ও সাহিত্যের যে উদার ক্ষেত্রে সকল মতভেদ সত্ত্বেও একরাষ্ট্ৰীয় মানষের মেলবার জায়গা, 8O
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৪৬
অবয়ব