পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

oఆ শ্ৰীকান্ত ওলাউঠায় মহামারিতে উজাড় হইয়া গিয়া বৰ্ত্তমান স্থানে সরিয়া গিয়ছে। পরিত্যক্ত গৃহের বহু চিহ্ন চারিদিকে বিদ্যমান। অস্তগামী সূর্ঘ্যের তির্যাক রশ্মিট ধীরে ধীরে নামিয়া আসিয়া দীঘির কালো জলে সোনা মাখাইয়া দিল, আমি চাহিয়া বসিয়া রহিলাম। তারপরে ক্রমশঃ সূৰ্য্য ডুবিয়! দীঘির কালে জল আরো কালে হইয়া উঠিল, অদূরে বন হইতে বাহির হইয়৷ দুই-একট। পিপাসাৰ্ব শৃগাল ভয়ে ভয়ে জলপান করিয়া সরিয়া গেল । আমার যে উঠিবার সময় হইয়াছে, সে সময়টুকু কাটাইতে আসিয়াছিলাম তাহ। কাটিয়া গিয়াছে—সমস্ত অনুভব করিয়াও উঠিতে পারিলাম না—এই ভাঙ্গা ঘাট যেন আমাকে জোর করিয়৷ বসাইয়া রাখিল । মনে হইল, এই যে পা রাখিয়া বসিয়াছি, সেইখানে পা দিয়! কতলোক কতবার আসিয়াছে, গিয়াছে । এই ঘাটেই তাহার স্বান করিত, গা ধুইত, কাপড় কাচিত, জল তুলিত। এখন তাহার কোথাকার কোন জলাশয়ে এই সমস্ত নিত্যকৰ্ম্ম সমাধ করে ? এই গ্রাম যখন জীবিত ছিল, তখন নিশ্চয়ই তাহারা এমনি সময়ে এখানে আসিয়া বসিত ; কত গান, কত গল্প করিয়া সারাদিনের শ্রান্তি দূর করিত। তারপরে অকস্মাৎ একদিন যখন মহাকাল মহামারীরূপে দেখা দিয়া সমস্ত গ্রাম ছিড়িয়া লইয়া গেলেন, তখন কত মুমূযু হয় ত তৃষ্ণায় ছুটিয়া আসিয়া এই ঘাটের উপরেই শেষ-নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া তাহার সঙ্গে গিয়াছে । হয় ত তাহাদের তৃষ্ণাৰ্ত্ত আত্মা আজিও এইখানে ঘুরিয়া বেড়ায় । যাহা চোখে দেখি না তাহাই যে নাই, এমন কথাই বা কে জোর