পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত سوياً পেশ করিলেন । মেজদা 'ন'লিখিয়া দিলেন । কাজেই ছোড়দা মুখ ভারি করিয়া মিনিট-দুই বসিয়া থাকিয় তেষ্ট পাওয়া’ আজ্জি দাখিল করিয়া দিলেন । এবার মঞ্জুর হইল। মেজদ। সই করিয়া লিখিলেন—হু —আটটা একচল্লিশ মিনিট হইতে আটট সাতচল্লিশ মিনিট পৰ্য্যন্ত। পরওনা লইয়৷ ছোড়দ হাসিমুখে বাহির হইতেই যতীনদ ফিরিয়া আসিয়া হাতের টিকিট দাখিল করিলেন । মেজদা ঘড়ি দেখিয়া সময় মিলাইয়া একটা খাত বাহির করিয়া সেই টিকিট গদ দিয়া আঁটিয়া রাখিলেন । সমস্ত সাজ-সরঞ্জাম তাহার হাতের কাছেই মজুত থাকি ত । সপ্তাহপরে এই সব টিকিটের সময় ধরিয়া কৈফিয়ৎ তলব করা হইত। এইরূপে মেজদার অত্যন্ত সতর্কতায় এবং সুশৃঙ্খলতায় আমাদের এবং তাহার নিজের কাহারও এতটুকু সময় নষ্ট হইতে পাইত না । প্রত্যহ এই দেড়ঘণ্টা কাল অতিশয় বিদ্যাভ্যাস করিয়া রাত্রি নয়টার সময় আমরা যখন বাড়ীর ভিতরে শুইতে আসিতাম, তখন মা-সরস্বতী নিশ্চয়ই ঘরের চৌকাঠ পর্যন্ত আমাদিগকে আগাইয় দিয়া যাইতেন ; এবং পরদিন ইস্কুলে ক্লাসের মধ্যে যে সকল সম্মান-সৌভাগ্য লাভ করিয়া ঘরে ফিরিতাম, সে ত আপনার বুঝিতেই পারিতেছেন। কিন্তু মেজদার দুর্ভাগ্য, তাহার নির্বের্বাধ পরীক্ষকগুলা তাহাকে কোনদিন চিনিতেই পারিল না। নিজের এবং পরের বিদ্যাশিক্ষার প্রতি এরূপ প্রবল অনুরাগ, সময়ের মুলা সম্বন্ধে এমন সূক্ষ দায়িত্ব বোধ থাকা সত্ত্বেও, তাহাকে বারংবার ফেল করিয়াই দিতে লাগিল। ইহাই অদৃষ্টের অন্ধ বিচার ? যাক—এখন আর সে দুঃখ জানিয়া কি হইবে ! .