পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত YS রাখে । পরে বর্ষার জলস্রোতে বড় বড় রুই-কাতলা ভাসিয়া অসিয়া এই কাঠিতে বাধা পাইয়া লাফাইয়া ও দিকে পড়িতে চায় এবং দড়ির জালে আবদ্ধ হইয় থাকে । দশ, পনর, বিশ সের রুই-কাতলা গোট। পাঁচ-ছয় ইন্দ্র চক্ষের নিমিষে নৌকায় তুলিয়া ফেলিল। সেই বিরাটকায় মৎস্তরাজের তখন পুচ্ছতাড়নায় ক্ষুদ্র ডিঙ্গিখানা যেন চূৰ্ণবিচূর্ণ করিয়া দিবার উপক্রম করিতে লাগিল, এবং তাহার শব্দ ও বড় কম হইল না। এত মাছ কি হবে ভাই ? কাজ আছে । আর না, পালাই চল । বলিয়া সে জাল ছাড়িয়া দিল । আর দাড় টানিবার প্রয়োজন নাই । আমি চুপ করিয়া বসিয়া রহিলাম। তখন তেমনি গোপনে আবার সেই পথেই বাহির হুইতে হইবে। অনুকূল স্রোতে মিনিট দুই-তিন খরবেগে ভাটাইয়া আসিয়া হঠাৎ একস্থানে একটা দমক্‌ মারিয়া যেন আমাদের এই ক্ষুদ্র ডিঙিটি পাশের ভুট্টা-ক্ষেতের মধ্যে গিয়া প্রবেশ করিল । তাহার এই আকস্মিক গতি-পরিবর্তনে আমি চমকিত হইয়। প্রশ্ন করিলাম, কি ? কি হ’ল ? ইন্দ্র আর একটা ঠেলা দিয়া নৌকাখানা আরও খানিকট। ভিতরে পাঠাইয়া দিয়া কহিল, চুপ ! শালার টের পেয়েছে— চারখানা ডিঙি খুলে দিয়েই এদিকে আসচে—এ দ্যখি । তাই ত বটে ! প্রবল জলতাড়নার ছপাছপ শব্দ করিয়া তিনখান নৌকা আমাদের গিলিয়া ফেলিবার জন্য যেন কৃষ্ণকায় দৈত্যের মত ছুটিয়া আসিতেছে। ওদিকে জাল দিয়া বন্ধ, স্বমুখে ইহার— পলাইয়া নিস্কৃতি পাইবার এতটুকু স্থান নাই । l